মোঃ সামিরুজ্জামান, বিশেষ প্রতিনিধি
ভোলার উপকূলীয় অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা এবং প্রাণিসম্পদের উন্নয়নে মাঁচা পদ্ধতিতে ছাগল পালন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি সম্পন্ন হয়েছে। পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)-এর আরএইচএল প্রকল্পের সহযোগিতায় গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থা (জিজেইউএস) এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করে। ৩ ডিসেম্বর, ভোলার সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের পরীর হাট এলাকায় অনুষ্ঠিত এ প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে স্থানীয় ক্ষুদ্র খামারিদের মাঁচা পদ্ধতিতে ছাগল পালন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন ভোলা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম খান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রকল্প-সমন্বয়কারী কৃষিবিদ আনিসুর রহমান টিপু, যিনি তার বক্তব্যে প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য এবং উপকূলীয় অঞ্চলের খামারিদের জন্য এর গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম খান তাঁর বক্তব্যে মাঁচা পদ্ধতিতে ছাগল পালনের বিভিন্ন দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তিনি ছাগলের বাসস্থান ব্যবস্থাপনা, খাদ্য সরবরাহ, রোগ নিয়ন্ত্রণ, ভ্যাকসিন প্রদান এবং গর্ভবতী ছাগলের সঠিক যত্নের বিষয়েও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন।
প্রশিক্ষণ কর্মসূচিটি পরিচালনা করেন সি.এম.ও (প্রাণিসম্পদ) আল ফায়জুল নুন্নবী এবং সি.এম.ও (ফিশারিজ) ঐশি মজুমদার। তারা মাঁচা পদ্ধতি ও প্রাণিসম্পদ খাতের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে প্রশিক্ষণার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেন।
প্রশিক্ষণের মূল উদ্দেশ্য ছিল উপকূলীয় অঞ্চলে প্রাণিসম্পদের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা করা এবং মাঁচা পদ্ধতির মাধ্যমে ছাগল পালনে খামারিদের দক্ষতা বৃদ্ধি করা।
জিজেইউএস-এর কারিগরি কর্মকর্তা এস. এম. সাকিবুল ইসলাম জানান, আরএইচএল প্রকল্পের আওতায় ভোলা সদর ও বোরহানউদ্দিন উপজেলায় ২০টি ব্যাচে মোট ৪০০ জন উপকারভোগীকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। এছাড়া, প্রশিক্ষণার্থীদের মাঁচা পদ্ধতির ঘর নির্মাণ এবং প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ করা হবে। এই কার্যক্রম চলমান থাকবে।
এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি স্থানীয় খামারিদের জন্য একটি বিশেষ সুযোগ হিসেবে কাজ করবে। প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত খামারিরা তাদের অর্জিত জ্ঞান বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করে ছাগল পালনে সফলতা অর্জন করতে পারবেন এবং এর মাধ্যমে তাদের জীবিকা উন্নয়ন হবে। এ উদ্যোগ প্রাণিসম্পদের সুরক্ষা এবং স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি উপকূলীয় অঞ্চলের প্রাণিসম্পদ খাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে চিহ্নিত হবে এবং আশা করা হচ্ছে, এটি খামারিদের মধ্যে ছাগল পালনে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করবে।