পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় অবস্থিত ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের জমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের অভিযোগ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে প্রতারণা করেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের পূর্ণবাসন কেন্দ্র ‘স্বপ্নের ঠিকানা’র অধীন ১৩০টি পরিবারের সদস্যরা বুধবার এক মানববন্ধনে এই অভিযোগ উত্থাপন করেন।
ধানখালী ইউনিয়নের চায়না টেকনিক্যাল স্কুলের সামনে অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধনে উপস্থিত বাসিন্দারা তাদের ৭ দফা দাবি জানিয়ে বলেন, এই দাবিগুলো ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পূরণ না হলে তারা পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র ঘেরাও করবেন।
বিক্ষোভকারীদের মধ্যে স্বপ্নের ঠিকানা পূর্ণবাসন কেন্দ্রের বাসিন্দা বিলকিস বেগম অভিযোগ করে বলেন, “সরকার আমাদের জমি অধিগ্রহণের পর বাড়িঘর দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও এখনো আমাদের ঘরগুলোর দলিল দেয়নি। বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা এবং সন্তানদের চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও পালন করেনি।”
অন্য বাসিন্দা কোহিনুর বেগম বলেন, “শেখ হাসিনা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হলে প্রতি ইউনিট বিক্রির শতকরা ৩% ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের দেওয়া হবে, কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হয়নি।”
ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দারা তাদের ৭ দফা দাবির মধ্যে উল্লেখ করেছেন, পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদিত বিদ্যুতের প্রতি ইউনিট বিক্রয় থেকে শতকরা ০.৩% ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে দিতে হবে, ১৩০ পরিবারের সদস্যদের যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি দিতে হবে, জমির অধিগ্রহণের সময় প্রতিশ্রুত তিনগুণ অর্থের পরিবর্তে প্রদত্ত দেড়গুণ অর্থের বাকি অংশ দ্রুত দিতে হবে, এবং প্রতিটি ঘরের দলিলসহ বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।
ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দা মো. মিঠু খান দুর্নীতির অভিযোগ করে বলেন, “বৃষ্টি নামলেই আমাদের ঘর থেকে পানি পড়ে। অধিকাংশ ঘরের দেয়াল ধসে পড়েছে। সেইফটি ট্যাংকের কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। দুর্নীতিতে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”
পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফিন জানান, বাসিন্দাদের দাবি তার কাছে এলে সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।