মো: সামিরুজ্জামান, বিশেষ প্রতিনিধ
গত ৫ আগস্ট রাজধানীর বাড্ডা থানা এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন ফরিদপুর সদর উপজেলার মো. সিরাজুল ইসলাম ব্যাপারী (২৯)। এ ঘটনায় ২৯ আগস্ট ঢাকার সিএমএম আদালতে ফরিদপুরের সালথা গ্রামের বাসিন্দা হাসিবুল হাসান লাবলু একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ পটুয়াখালী পৌরসভার সদ্য সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন আহম্মেদকেও আসামি করা হয়েছে, যা পটুয়াখালী শহরে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, মামলায় ১২০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদ এবং সাবেক মৎস্য মন্ত্রী আবদুর রহমান। মামলার ১৩ নম্বর আসামি হিসেবে পটুয়াখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন আহম্মেদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মামলার অভিযোগ অনুসারে, ১নং থেকে ৭নং আসামির নির্দেশে ৮নং থেকে ১২০নং আসামিরা ও অজ্ঞাত ২০০-৩০০ জন সশস্ত্র হয়ে ৫ আগস্ট সকাল ১০টায় একটি শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলা চালায়, যেখানে গুলিবিদ্ধ হয়ে সিরাজুল ইসলাম নিহত হন।
ঘটনাটি ঢাকায় ঘটলেও মামলায় ফরিদপুরের বিভিন্ন উপজেলার ৫৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, যার মধ্যে ফরিদপুর সদরের ২৩, নগরকান্দার ২৪, সালথার ৯, বোয়ালমারীর ২ এবং আলফাডাঙ্গার ১ জন রয়েছেন। মামলার বাদী হাসিবুল হাসান লাবলু এই ব্যক্তিদের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে বলেছেন বলে জানা গেছে।
সিরাজুল ইসলামের মৃত্যুর বিষয়ে তার পিতা শফিকুল ইসলাম জানান, “ঘটনার সময় জনতা বাড্ডা থানা আক্রমণ করলে পুলিশ গুলি চালায়। গুলিতে নিহত হয় সিরাজুল।” তিনি আরও দাবি করেন যে, মামলা দায়েরের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
পটুয়াখালী পৌরসভার সদ্য সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, “আমাকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে এই মামলায় জড়ানো হয়েছে। ঘটনার দিন আমি পটুয়াখালীতে ছিলাম, যা নথিপত্র, সিসিটিভি ফুটেজ এবং মোবাইল লোকেশন যাচাই করলে স্পষ্ট হবে।”
মামলার বাদী হাসিবুল হাসান লাবলুর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি।