রংপুর-ঢাকা চার লেন মহাসড়ক নির্মাণ প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। ইতিমধ্যে প্রকল্পের ৮৫% কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
সাউথ এশিয়া সাবরিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশনের (সাসেক-২) আওতায় বাস্তবায়নাধীন এই প্রকল্পটি শুধু বাংলাদেশের জন্যই নয়, সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে সাসেক করিডোর, এশিয়ান হাইওয়ে, বিমসটেক করিডোর ও সার্ক হাইওয়ের সাথে সংযোগ স্থাপিত হবে।
১৯০.৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই মহাসড়কে থাকছে অত্যাধুনিক সুবিধা। ৪ লেন মূল সড়কের পাশাপাশি ২ লেন সার্ভিস রোড, ২৬টি সেতু, ৩৯টি আন্ডারপাস, ৬টি ফ্লাইওভার, ১৮০টি কালভার্ট এবং ১১টি পথচারী সেতু নির্মিত হচ্ছে। এতে করে যানজট ও দুর্ঘটনা কমবে, পাশাপাশি দ্রুত যাতায়াত সম্ভব হবে।
প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে রংপুর থেকে ঢাকা যেতে লাগবে মাত্র ৫ ঘণ্টা। এতে করে উত্তরাঞ্চলের ২২টি জেলার মানুষের জীবনমান উন্নত হবে। বাড়বে ব্যবসা-বাণিজ্য, গড়ে উঠবে নতুন শিল্প-কারখানা। সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থান।
রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আকবর আলী বলেন, ‘এই প্রকল্প উত্তরবঙ্গের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক পরিবর্তন আনবে। দুর্বল যোগাযোগের কারণে এতদিন বিনিয়োগ ব্যাহত হচ্ছিল, সেটি দূর হবে। পাশাপাশি ভারত-নেপালের সঙ্গে বাণিজ্য প্রসারেও বড় ভূমিকা রাখবে।’
প্রকল্পের কাজ আরও দ্রুত এগিয়ে নিতে সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী জানান, ভূমি অধিগ্রহণের জটিলতা দ্রুত নিরসন করে চলতি বছরের শেষের দিকেই প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশের প্রথম ডিজিটাল মহাসড়ক হিসেবে এটি হবে একটি মাইলফলক। এখানে থাকছে স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক মনিটরিং ব্যবস্থা। যানবাহনের ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য থাকছে অত্যাধুনিক এক্সেল লোড কন্ট্রোল সিস্টেম।
প্রকল্প পরিচালক ড. ওয়ালিউর রহমান বলেন, ‘এই মহাসড়ক নির্মিত হলে আগামী ৩০-৪০ বছর উত্তরাঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের দুর্ভোগ কমবে। শুধু তাই নয়, সারা দেশের অর্থনীতিতেও এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।’
চাকরিপ্রত্যাশী তোহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এই মহাসড়ক নির্মিত হলে আমাদের মত যুবকদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে যাবে। ঢাকায় যাতায়াত সহজ হওয়ায় চাকরির সুযোগ বাড়বে। পাশাপাশি এই অঞ্চলেও নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।’
সব মিলিয়ে রংপুর-ঢাকা মহাসড়ক প্রকল্প শুধু যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নই নয়, সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি বড় মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে। এর সুফল পাবে দেশের কোটি কোটি মানুষ।”