মোঃ রাওফুল বরাত বাঁধন ঢালী
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (রমেক) আবাসিক ভবন থেকে মিললো লাশ, আখতারুজ্জামান (৫২) নামে এক চিকিৎসকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকাল ১০, ৪০ মিনিটের দিকে হাসপাতালের শেখ রাসেল পোস্ট গ্রাজুয়েশন ডরমেটরি ভবনের ষষ্ঠ তলার ৬-এফ কক্ষ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
চিকিৎসক মো. আখতারুজ্জামান নীলফামারী সদর উপজেলার প্রতিভা নীলপাড়া গ্রামের মোজাম্মেল হকের ছেলে।
তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পিজি হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের মেডিকেল অফিসার, রংপুর মেডিকেলে পোস্ট গ্রাজুয়েটের একজন শিক্ষার্থী তিনি তিন দিন আগে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করার করার জন্য এসেছিলেন।
জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে মরাদেহ থেকে রক্ত গড়িয়ে দরজার বাইরে আসতে দেখে হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক মিলুনুর রহমান মিলন পুলিশকে জানায়।
পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দরজা ভেঙে ওই চিকিৎসকের মরদেহ উদ্ধার করেণ।
পুলিশ ও চিকিৎসকরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন স্ট্রোক করে মৃত্যুবরণ করেছেন।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (কোতয়ালী জোন) মো. আরিফুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, ওই চিকিৎসক দীর্ঘদিন ফ্যাটি লিভারে ভুগছিলেন। তিনি অস্বাভাবিক খাবার খেতেন। কখনো কখনো এক সাথে সারা দিনে ২৫০ গ্রামের কোল্ড ড্রিংকস ৫০টি, ৪০টি ডিম ও সাথে প্রচুর ফাস্টফুড খেতেন। খাওয়ার বিষয়ে তাকে নিষেধ করলেও তিনি শোনেননি।
তার দুইজন স্ত্রী রয়েছে বড় স্ত্রী জেসমিন আক্তার ও ছোট স্ত্রী কোহিনুর আক্তার।
এ বিষয়ে মৃত আখতারুজ্জামানের দ্বিতীয় স্ত্রী রংপুর নগরীর ধাপ শিমুলবাগ এলাকার কোহিনুর আক্তার, সাংবাদিকদের বলেন,আমার সঙ্গে তিন দিন আগে মোবাইল ফোনে আখতারুজ্জামানের কথা হয়েছে।
তখন উনি গ্রামের বাড়ি নীলফামারীতে ছিলেন। উনি প্রায়ই অসুস্থ থাকতেন এর মধ্যে কবে উনি রংপুরে এসেছেন, সেটা আমি জানতাম না। মঙ্গলবার দুপুরে মৃত্যুর সংবাদ জানতে পেরে ঘটনাস্থলে এসেছি।
তবে এখন পর্যন্ত বলতে পারছি না কিভাবে তার মৃত্যু হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমি তো জানতাম উনি ঢাকার বাসিন্দা কিন্তু পরে জেনেছি নীলফামারী ওনার জন্মস্থান।
ঢাকা এবং নীলফামারীর ঠিকানায় ওনার দুটি এনআইডি কার্ড রয়েছে। আমি ওনার দ্বিতীয় স্ত্রী, আমার কোনো সন্তান নেই। আমাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ ছিল না। উনার প্রথম স্ত্রীর সংসারে তিন সন্তান রয়েছে।
কোহিনূর আক্তার বলেন, আমার স্বামী ঢাকায় পিজি হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার হিসাবে কর্মরত ছিলেন।
রংপুর মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা করেছেন। এখানে তিনি পোস্ট গ্র্যাজুয়েট করতে আটবার পরীক্ষা দিয়ে পাস করতে পারেননি।
তার নবমবার পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। শারীরিক অসুস্থতার কারণে উনি মানসিকভাবে চিন্তিত ছিলেন।
তিনি লিভার ও পায়ের ব্যাথাসহ কয়েকটি রোগেও ভুগছিলেন।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (কোতয়ালি জোন) আরিফুজ্জামান জানান, খবর পেয়ে চিকিৎসকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
ময়নাতদন্ত না হওয়া পর্যন্ত কোনো কিছু বলা যাচ্ছে না।
তবে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
রংপুর মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মাহফুজুর রহমান জানান, ডা. আক্তারুজ্জামান পোস্ট গ্রাজুয়েটের শিক্ষার্থী ছিলেন।
সকালে ডরমেটরি থেকে জানানো হয়, আক্তারুজ্জামানের রুম থেকে গন্ধ আর রক্ত গড়িয়ে আসছে।
পরে বিষয়টি আমরা পুলিশ ও জেলা প্রশাসককে জানাই। একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে দরজার তালা ভেঙে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তাঁর পরিবার মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে চেয়ে সাংবাদিক দের পাশে থাকতে অনুরোধ করেন।
সম্পাদকীয় ও বাণিজিক কার্যালয়: ব্লক: ই, সেক্টর: ১৫, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০
নিউজ রুম মোবাইল: +৮৮০ ১৬১৯৮৭৭১৫৭, ইমেইল: news@hotnews24.news
সম্পাদক ইমেইল: editor@hotnews24.news, বিশেষ প্রয়োজনে: hotnewslive24@gmail.com
কপিরাইট ©2006-2024 hotnews24.news