ডিজিটাল ডেস্ক
সাম্প্রতিক সময়ে সিলেট অঞ্চলে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বন্যার কারণ অনুসন্ধানে উঠে এসেছে হাওর এলাকায় নির্মিত মিঠামইন-অষ্টগ্রাম সড়কের নাম। বিশেষজ্ঞ ও স্থানীয় বাসিন্দারা এই সড়কটি হাওরের স্বাভাবিক জলপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে বন্যার তীব্রতা বাড়িয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন।
২০১৮ সালে উদ্বোধন করা এই সড়কটি সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের একটি মেগা প্রকল্প। যদিও এটি হাওর অঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে নির্মিত হয়েছিল, কিন্তু এর পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
পরিবেশ বিজ্ঞানী ড. মো. খালেকুজ্জামান বলেন, "হাওরের উপর সড়ক নির্মাণের ফলে পানি প্রবাহের স্বাভাবিক গতি বাধাগ্রস্ত হতে পারে, যা সিলেট অঞ্চলে বন্যার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।"
অন্যদিকে, পানি বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত মনে করেন, সড়কটি এখনও বন্যার প্রধান কারণ না হলেও ভবিষ্যতে এর প্রভাব আরও গুরুতর হতে পারে। তিনি যোগ করেন, "সড়কটির নির্মাণে পরিবেশগত সমীক্ষা যথাযথভাবে করা হয়নি, যা উদ্বেগের কারণ।"
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সড়ক নির্মাণের পর থেকে হাওরের পানি প্রবাহের ধরণ পরিবর্তিত হয়েছে। অনেকে মনে করেন, এর কারণে হাওরের পানি সঠিকভাবে নিষ্কাশিত হতে না পেরে সিলেট অঞ্চলে জমে যাচ্ছে, যা বন্যার তীব্রতা বাড়াচ্ছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, শুধুমাত্র এই সড়কটিই বন্যার একমাত্র কারণ নয়। ভারী বর্ষণ, নদীর নাব্যতা সংকট, হাওরের ভরাট এবং অপরিকল্পিত উন্নয়ন কাজও এর জন্য দায়ী। বিশেষ করে ভারতের মেঘালয় ও আসাম অঞ্চলে অতিবৃষ্টির কারণে সিলেট অঞ্চলে পানির প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে।
পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিশেষজ্ঞরা কয়েকটি সুপারিশ করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে যথাযথ পরিবেশগত সমীক্ষা, নদী খনন ও পুনর্বাসন, উচ্চসেতু নির্মাণ এবং নদীর তীরে বাঁধ নির্মাণ।
সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে সামগ্রিকভাবে পরিবেশগত দিকগুলো বিবেচনায় রেখে উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হলে ভবিষ্যতে এমন বন্যার পুনরাবৃত্তি রোধ করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
সম্পাদকীয় ও বাণিজিক কার্যালয়: ব্লক: ই, সেক্টর: ১৫, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০
নিউজ রুম মোবাইল: +৮৮০ ১৬১৯৮৭৭১৫৭, ইমেইল: news@hotnews24.news
সম্পাদক ইমেইল: editor@hotnews24.news, বিশেষ প্রয়োজনে: hotnewslive24@gmail.com
কপিরাইট ©2006-2024 hotnews24.news