মাধবপুর(হবিগঞ্জ)প্রতিনিধি
হবিগঞ্জের মাধবপুরে মাওলানা আসাদ আলী ডিগ্রী কলেজ দাখিল পরীক্ষা কেন্দ্রে নকলের মহোৎসব নিয়ে প্রতিবেদন ও চাঞ্চল্যকর ভিডিও ও রেকর্ডিং এসপি ও ডিসিকে হোয়াটসঅ্যাপে প্রদান করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন কালবেলা পত্রিকার মাধবপুর প্রতিনিধি মুজাহিদ মসি।সেজন্যে তাৎক্ষণিক নকলের সিন্ডিকেট চক্রের একজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়। কিন্তু পরীক্ষার হলে অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করার সত্ত্বেও রহস্যজনকভাবে ঘটনার ৪ মাস পর ওই সাংবাদিককে আসামি করে মাধবপুর থানায় মামলা দায়ের হয়।পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সাংবাদিক মামলার আসামি হওয়ার ঘটনায় এলাকায় যেমন চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে তেমনি বিস্ময় প্রকাশ করেছেন সাংবাদিক ও সচেতন মহলও।
এ ঘটনা কারন জানতে গত ৯ জুন আমাদের মাতৃভূমি পত্রিকার মাধবপুর প্রতিনিধি বিশ্বজিৎ পাল মাধবপুর থানার ওসি রাকিবুল ইসলাম খানের কাছে ২২টি প্রশ্ন লিখে তা তথ্য অধিকার আইনে জানতে চেয়েছেন।যার অনুলিপি মাধবপুর ও চুনারুঘাট সার্কেলের এএসপি ও হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসককেও দেয়া হয়েছে।ওই ২২টি প্রশ্ন হচ্ছে –
১.কোন অপরাধ প্রসঙ্গত জাতির মেরুদন্ড বিধ্বংসী দাখিল পরীক্ষা কেন্দ্রে মহোৎসবের বিষয়টির সাথে জড়িত পরীক্ষার কেন্দ্র কমিটির পুরো চক্রই যদি জড়িত থাকে তাহলে অনুসন্ধানী সাংবাদিকরা কি করবে।ফরমাল অনুমতি নিতে গেলে তো অপরাধীরা সতর্ক হয়ে যাবে।এসব ক্ষেত্রে অনুসন্ধানী সাংবাদিকরা কিভাবে তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করবে।
২.পরীক্ষার হলে একই রুমে সবাই একই সেটকোড পূরণ করেছে। যা তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে।প্রকাশ্য প্রমান থাকার সত্ত্বেও জাতি বিধ্বংসী নকলের মহোৎসবের বিষয়টির কি কোন নিরপেক্ষ তদন্ত হতে পারে।নাকি এসব চলছে চলবে দেখেও না দেখার ভান ধরতে হবে।৩.কেন্দ্র সচিব যেখানে নিজেই নকলের হুতা সে কি বাদী হয়ে অনুসন্ধানী সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ঘটনার ৪ মাস পর কোন নীল নকশার অংশীদার হতে মামলা দায়ের করতে পারে।
৪.বিনাতদন্তে কি এফআইআই মামলা দায়ের হতে পারে।যদি না হয় তাহলে কোন দায়ে তার প্রাথমিক সংশ্লিষ্ট তা প্রমাণ হল?
৫.মামলা দায়েরের জন্য পরীক্ষা কেন্দ্রের কমিটির অন্যান্য সদস্যদের মতামত নেওয়া হয়েছে কি। কেন্দ্রীয় কেন্দ্র কমিটির সকল সদস্যদের মতামত কি?এ বিষয়ে প্রত্যেকের মতামত জানতে চাই।
৬.মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের সভাপতির লিখিত/মৌখিক অনুমোদন রয়েছে কি? তার কি ধরনের অনুমোদন বা সম্মতি রয়েছে?
৭.ঘটনার ৪ মাস পর মামলা দায়ের এর বিষয়ে কেদ্রের সভাপতির বক্তব্য ও মতামত বিস্তারিত।
৮.পরীক্ষা কেন্দ্রে চাঞ্চল্যকর নকলের অডিও ও ভিডিও যেহেতু সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার,জেলা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদ্বয়,হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে প্রেরণ করা হয়েছিল সে সময়! তাহলে তারাও সাক্ষী! তাদের কি মতামত।সে হিসেবে মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে তাদের মতামত বা সাক্ষী জবানবন্দী ইত্যাদি নেওয়া কি আইন,বিধি বা যুক্তির মধ্যে পড়ে না! এ বিষয়ে বিস্তারিত জবাব চাই।
৯.নকলের ঘটনার মাদ্রাসার ডিউটিরত ২জন শিক্ষক সাক্ষী ছিল তাদেত কি হিসাবে আসামী করা হয়েছে।
১০.নকলের দায়ে হাতেনাতে ধরা খাওয়া বহিরাগত শিক্ষক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক সেলিম মিয়া ওই মামলায় সংশ্লিষ্ট করা হলো না? চূড়ান্ত প্রতিবেদনে(চার্জশীটে) কি তার দায় উঠে আসতে পারে।
১২.তার বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের হলো বাদি হলো কেন্দ্র সচিব নিজেই যে নিজেই নকলের হুতা।ওই ঘটনায় সাক্ষী নেই কেন। কেন্দ্র সচিবের দায়ের করা ওই মামলার চুড়ান্ত প্রতিবেদনের একটা কপি চাই।
১৩.সাংবাদিকদের একটি টিম ভিতরে প্রবেশ করেছিল কেন একজনকে পরিকল্পিতভাবে আসামি করা হলো।এ বিষয়ে একটি বিস্তারিত মতামত।
১৪.অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা মুজাহিদ মসির এক যুগের অভিজ্ঞতা ও বিভিন্ন পুরস্কার পাওয়ার কৃতিত্বও রয়েছে।কালবেলার মাধবপুর(হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি মুজাহিদ মসি (আমাকে)তথাকথিত সাংবাদিক বলে কমিটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা কতটুকু পেশাদারিত্ব বা নিরপেক্ষতার প্রশ্ন সে বিষয়ে মতামত।
১৫.ঘটনার তাৎক্ষণিক অবস্থায় মোবাইল কোর্টের আওতায় কোন ব্যবস্থা না গ্রহন করে এসব বিতর্কিত দীর্ঘসূত্রিতামূলক কর্মকাণ্ড কি স্বচ্ছতার ক্ষেত্রে প্রশ্ন তুলছে না।
১৬.কর্তৃপক্ষ কি মনে করে ওই ঘটনায় সারা দেশে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় নেতিবাচক প্রভাব বা নেতিবাচক একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন হতে পারে।
১৭.মামলার বাদী কেন্দ্র সচিব গনমাধ্যমের সাথে এ বিষয়ে কথা বলছে না! কোন সূত্র বলছে তার নিজের বুদ্ধিতে সেসব করছে না! এতে কি সরকার তথা প্রশাসনের ভাবমূর্তিকে ক্ষুন্ন হচ্ছে না।
১৮.প্রধানমন্ত্রী অঙ্গীকার ও মেসেজ দুর্নীতির ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স এই ক্ষেত্রে কি কোন তদন্ত বা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
১৯.ওই মামলার চার্জশিট প্রদান করার ক্ষেত্রে প্রত্যেকটা সেক্টর ও ধাপ নির্ণয় করার ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত উদ্যোগ বা দক্ষ অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে কি।
২০.মামলার বাদী কি কখনো তদন্তের আসামী হওয়ার নজির রয়েছে।এখানে মামলার বাদি নিজেই আসামি!এমন সত্যতার অনুসন্ধানে কোন তদন্ত কি প্রশাসন চালাবে বা চালাতে পারে।
২১.অপরাধ বিজ্ঞানের একটি কথা অপরাধী যত ধূর্ত হোউক না কেন আপরাধের একটি ক্লু রেখে যায়। এই আলোকে মামলার অভিযোগে ঘটনার তারিখ ও কমিটির প্রতিবেদনে ঘটনার তারিখ ভিন্ন ভিন্ন এ ঘটনার মন্তব্য কি।
২২.নকলের মহোৎসবসহ অনিয়ম ও দুর্নীতির হিরিকের চাঞ্চল্যকর তথ্য রয়েছে আমাদের কাছে যা কিছুটা দৈনিক মানবজমিন ও কালবেলায় রিপোর্টে ফুটে উঠেছে।এ বিষয়ে একাধিক দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা আছে অথবা সয়োমটো বা স্বপ্রনোদিত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে কি।
প্রসঙ্গত, তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ এর ৯(২)ধারা অনুযায়ী আবেদনের ৩০ দিনের মধ্যে যেকোন সরকারি কর্মকর্তা আবেদিত তথ্যের জবাব দিতে বাধ্য থাকেন।
সাংবাদিক বিশ্বজিৎ পাল বলেন,কোন কিছু জানতে চাওয়ার তথ্য অধিকার আইনের চেয়ে উত্তম পদ্ধতি আর নেই।আমরা আশাবাদী আপিল কিংবা তথ্য কমিশনে চিঠি না দিয়েই পুলিশের চৌকোষ কর্মকর্তাগণ এর দ্রুত জবাব দিবেন।