মোঃ মনোয়ার হোসেন, রাজশাহী
রাজশাহীর সাংবাদিক কাজী শাহেদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে আদালতে মামলা করেছেন নানা বিতর্কিত ঘটনার জন্ম দেয়া সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার রাজশাহীর আমলি আদালতে তিনি মামলাটি করেন। ওই মামলায় কাজী শাহেদের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ করেছেন রফিকুল ইসলাম। এনিয়ে তার সম্পাদিত অনলাইনে সংবাদও করেছেন।
আদালতে করা মামলায় কাজী শাহেদ সম্পর্কে যে তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে তার প্রতিবাদ জানিয়েছেন হাউজ বিল্ডিংয়ে প্লটে কাজী শাহেদের অন্য দুই অংশীদার জিয়াউল গণি সেলিম ও রোজিনা ইয়াসমিন। তারা বলেন, ‘কাজী শাহেদ আমাদের সঙ্গে কোনো প্রতারণা করেননি। বরং রফিকুল ইসলাম ওই প্লটের সোয়া কাঠা জমি কিনতে চেয়ে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া বার বার বিলম্বিত করেছেন। কয়েক দফা সময় নিয়েও টাকা পরিশোধ করেননি বলে কাজী শাহেদ আমাদের কাছে অভিযোগ করেছেন। এনিয়ে আমরাও রফিকুল ইসলামকে বলেছি। উল্টো তিনি কাজী শাহেদকে উকিল নোটিস পাঠিয়েছেন, যাতে মিথ্যা তথ্য পরিবেশন করেছেন।’ তারা আরও বলেন, ‘আগে থেকেই তার উদ্দেশ্য খারাপ ছিল। কারণ ১৯ মে উকিল নোটিশ পাঠালেও ১৪ মে তিনি হাউজ বিল্ডিংয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। অর্থাৎ আগে থেকেই করা পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজী শাহেদকে হেয় করতে রফিকুল ইসলাম মামলাটি করেছেন।’
মামলা প্রসঙ্গে সিনিয়র সাংবাদিক কাজী শাহেদ বলেন, কেউ ক্ষুব্ধ হলে আদালতের আশ্রয় নিতেই পারে। কিন্তু কোনো সংবাদ প্রকাশ করলে শিষ্টাচার মেনে অভিযুক্তের বক্তব্য নেয়া প্রয়োজন ছিল। এখানে আমার কোনো বক্তব্য নেই। এমনকি আমার সঙ্গে যোগাযোগও করেননি প্রতিবেদক।’ তিনি আরও বলেন, ‘১৯ মে রফিকুল ইসলাম উকিল নোটিশ পাঠান। তার জবাবে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, দুই লাখ টাকা তিনি আমাকে দিয়েছেন জমি কেনার আগাম হিসেবে। অবশিষ্ট টাকা দিলে জমি রেজিস্ট্রেশন করে দেয়া হবে। আমি দুই লাখ টাকা নেয়ার কথা উকিল নোটিশে স্বীকার করেছি এবং বাকি টাকা পেলে জমি রেজিষ্ট্রেশন করে দিতেও আপত্তি নেই বলে জানিয়েছি। তার মানে ওই দুই লাখ টাকা আমি আত্মসাত করিনি। মামলার অভিযোগে আমার এ বক্তব্যটি রফিকুল ইসলাম অস্বীকার করেছেন এবং প্রকৃত সত্য গোপন করেছেন। মামলার অভিযোগে রফিক বলেছেন, আমি দুই লাখ টাকা আত্মসাত করেছি-যা শুধু মিথ্যা নয়, আমার পেশাগত, ব্যক্তিগত ও সামাজিক অবস্থানকে হেয় করেছে। একটি অনুমোদনহীন অনলাইনে আমার ছবিসহ এমন প্রচারণার বিরুদ্ধেও আইনগত পদক্ষেপ নিবো।’
এ বিষয়ে কথা বলতে কালের কণ্ঠ রাজশাহী ব্যুরো প্রধান রফিকুল ইসলাম বলেন, এ জমির দুটা অংশ। একটা পার্টে তাকে ৩২ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। ওই টাকা আমরা চারজনে পরিশোধ করেছি। সেই অংশ তো সে দিলোই না বরং তাঁর নিজের অংশ বিক্রির জন্য ২ লাখ নিয়েছে সেটাও সে দিচ্ছে না। তাহলে প্রতারণা কয়টা হলো- ২ টা। আমি যে তার পা ভেঙে দেয়নি এটার আল্লাহর কাছে শুকরিয়া।
উল্লেখ, নানা বির্তকিত কর্মকাণ্ডে জড়িত এ রফিকুল। অনৈতিক সুবিধা নিয়ে ২০২১ সালে ৩১ অক্টোবর রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাবের মানববন্ধনে হামলা চালায় এই রফিক গং। এরপর থিম্প ওমর প্লাজার সিকিউরিটি গার্ডের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়ায় সে। পুঠিয়ায় যুবলীগ নেতা সুমনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব করেন। প্রতি মূহুর্তে বিভিন্ন ইস্যুতে সুবিধা গ্রহণ পূর্বক একটি পক্ষ নিয়ে দ্বন্দ্ব করাই তাঁর মূল পেশা। তার বিরুদ্ধে ২০২১ সালে আদালতে রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাব একটি মামলা করেন। মামলাটি বোয়ালিয়া মডেল থানায় তদন্তধীন আছে।