সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের বিরুদ্ধে পক্ষাপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছেন আওয়ামী লীগের ওয়েব টিমের সমন্বয়ক তন্ময় আহমেদ। সম্প্রতি নিজের এক্স হ্যান্ডল থেকে তিনি এ বিষয়ে একটি পোস্ট করেন। এদিকে তন্ময় আহমেদের পোস্টকে উদ্ধৃতি দিয়ে এ নিয়ে এক্সে পোস্ট করেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী আলী আরাফাত।
সেখানে তিনি লেখেন, মেটা তাদের এই প্রতিবেদন লেখার জন্য বাইরের যাদের কাছ থেকে তথ্য নিয়েছে তাদের আসল পরিচয় তদন্ত করা উচিত। এটি শুধুমাত্র নির্লজ্জভাবে পক্ষপাতদুষ্টই নয় বরং বিভ্রান্তির একটি প্রতীক।
সম্প্রতি ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে বিরোধীদের সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর দায়ে ৫০টি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ও ৯৮টি পেজ বন্ধ করে দিয়েছে মেটা। এসব অ্যাকাউন্ট থেকে আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ বিএনপি এবং দলটির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হতো বলে জানিয়েছে মেটা।
এ নিয়ে এক্সে দেওয়া পোস্টে আওয়ামী লীগের ওয়েব টিমের সমন্বয়ক তন্ময় আহমেদ বলেন, মেটা তাদের প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ভুল তথ্য ছড়িয়ে যাচ্ছে। গত কয়েকটি নির্বাচনের আগে বাংলাদেশে ঘৃণাত্মক বক্তৃতা, সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্ররোচনা, অগ্নিসংযোগের আহ্বান রোধ করতে ব্যর্থ হয়েছে ফেসবুক। দেশের সুশীল সমাজও এর বিরুদ্ধে দীর্ঘ দিন ধরে বলে আসছে।
তন্ময় তাঁর পোস্টে ফেসবুকে পাওয়া শত শত লিঙ্কের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী এবং তার পরিবারের সদস্যদেরসহ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর বিষয়টি সামনে এনেছেন। তিনি বলেছেন, ওই পেজ এবং অ্যাকাউন্টগুলোর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আইআরই-এনডিআই থেকে হওয়া জরিপও প্রমাণ করে যে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে কুৎসা ছড়ানো হচ্ছে। মেটার এ বিষয়টিকে আমলে নেওয়া উচিত।
নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) একাউন্ট থেকে পোস্ট করা তথ্যের সত্যতা নিয়ে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে তন্ময় আহমেদ বলেন, কর্তৃপক্ষ অনুসন্ধান করতে পারে যে কেন এই গুজবের বাঁধ সম্পূর্ণরূপে ভেঙে গেছে। কেন এই তৃতীয় পক্ষটি কোনও নিরপেক্ষ অবস্থানের পরিবর্তে একটি রাজনৈতিক দলের সুরে সুর মেলাচ্ছে।
জামায়াতের ছাত্র সংগঠন শিবিরের দ্বারা নির্মম হামলার পর শরীরে ১৩০টির বেশি সেলাই লাগে তন্ময়ের। সম্প্রতি তিনি একটি লাইভ ব্রডকাস্টে এসে সেই দুঃসহ স্মৃতির কথা তুলে ধরেছেন। সেখানে তিনি বিএনপি-জামায়াত কর্মীদের দ্বারা হামলা এবং প্রাণনাশের হুমকির বিষয়টি তুলে ধরেন।
তন্ময় বলেন, অতীতে বিএনপি জামায়াতের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে আমার বিরুদ্ধে প্রাণনাশের হুমকিও দিয়েছে। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে ফেসবুক তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
তন্ময় বিএনপি জামায়াতের পক্ষ থেকে ছড়ানো গুজবের বিষয়টিকে ব্যাখা করার পাশপাশি আওয়ামী লীগ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিএনপির কেমন গুজব ছড়ায় তাও উল্লেখ করেছেন। সেইসঙ্গে নেটিজেনদের বিএনপি ও জামায়াত সংশ্লিষ্ট পেজগুলো থেকে গুজব তথ্যগুলো ঘেঁটে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি জানান, বাঁশেরকেল্লা এবং বিএনপি জামায়াতের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টগুলোকে গুজব ছড়ানো ও সহিংসতা উস্কে দেওয়ার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রীকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে।
বিএনপি সহিংসতা উস্কে দেওয়ার জন্য অফিসিয়াল ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেছে এমন একাধিক মিডিয়া রিপোর্টের উদ্ধৃতি একটি ব্যানারে উপস্থাপন করেছেন তন্ময় আহমেদ। যেখানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিএনপির সহিংসতা উসকে দেওয়ার সংবাদ প্রতিবেদনগুলো একত্রিত করে তিনি শিরোনামে লেখেন, মেটা কী গোপন করতে চায়?
বুয়েটের সাবেক শিক্ষার্থী তন্ময় বলেন, বাংলাদেশে আমি একা ফেসবুকের পক্ষপাতদুষ্টতা নিয়ে আপত্তি করছি তা নয়। বরং দীর্ঘকাল ধরে যুদ্ধাপরাধবিরোধী এবং মানবাধিকার কর্মীরা তাদের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলে আসছেন ।