রাওফুল বরাত বাঁধন ঢালী, লালমনিরহাট
পরীক্ষামূলক আপেল চাষ করে সফল হয়েছেন রংপুরের কাউনিয়ার বালাপাড়া ইউনিয়নে সাহাবাজ গ্রামের সহকারী অধ্যাপক আবু রেজার স্ত্রী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা হামিদা খাতুন। প্রথমে চারটি জাতের ৪টি চারা দিয়ে শুরু করেন পরীক্ষামূলক আপেলের চাষ।
তাতেই সফলতা ধরা দিয়েছে তার হাতে।
বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শেষে অবসর সময়ে বাড়িতেই শুরু করেন আপেলের চাষ।
প্রায় দুই বছর আগে বাগানে রোপণ করেন ৪টি গাছ।
প্রথমবার ফুল ও ফল ধরলেও একটি গাছে ২টি ফল আছে বাকি গুলো ঝরে গেছে।
ভবিষ্যতে বাগান বড় করে বাণিজ্যিকভাবে আপেল চাষের স্বপ্ন দেখছেন হামিদা।
আপেল ধরার খবর শুনে অনেকে ছুটে আসছেন বাগানের আপেল দেখতে।
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে উপজেলায় এটিই প্রথম আপেলের বাগান।
সরেজমিন আপেল বাগানে গিয়ে দেখা যায়, সহকারী অধ্যাপক আবু রেজা এবং তার স্ত্রী হামিদা খাতুন মিলে বাড়ির পাশে ২৫ শতাংশ জমিতে ৪টি জাতের ৪টি আপেল গাছসহ বিভিন্ন ফলের বাগান করেছেন।
তাদের বাগানে একটি গাছে ২টি আপেল ধরেছে। বাকি ৩টি গাছে ফুল ধরেছিল কিন্তু ফল হয়নি। আপেলের পাশাপাশি বাগানে মালটা, বেদানা, লিচু, বড়ই, আম, আলু বোখারা চাষ করেছেন।
আপেল চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার স্বামী আবু রেজার সহয়োগিতায় প্রায় দুই বছর আগে উল্লাপাড়া থেকে ১৪০০ টাকা দরে ৪টি জাতের হরিমন শর্মা ৯৯ (ভারত), আন্না (ইজরাইল), সুইট টপিক (অষ্ট্রেলি), গোল্ডেন ডোরমেড (যুক্তরাষ্ট্র) ৪টি চারা সংগ্রহ করেন। এরপর গর্ত করে কম্পোষ্ট ও জৈব সার মাটির সঙ্গে কিছু রাসায়নিক সার মিশিয়ে চারা গুলো রোপণ করেন।
তিনি বলেন, চলতি মৌসুমে চারটিতেই ফুল এসছিল কিন্তু এবার গোল্ডেন ডোরমেড জাতের গাছটিতে ২টি ফল ধরেছে।
এখন তার গাছের সবুজ পাতার ফাঁকে সুস্বাদু ২টি আপেল ঝুলছে।
আপেল গাছ আলো, বাতাস পূর্ণ এবং উঁচু জমিতে ভালো হয়।
বেলে দো-আঁশ মাটি আদর্শ হলেও অন্য মাটিতে ও রোপণ করা যায়।
তবে আপেল গাছ কোনোভাবেই জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শাহানাজ পারভীন বলেন, সাধারণত আপেল শীত প্রধান দেশে চাষ করা হয়।
তবে আমাদের দেশে এখন আপেল চাষ করা সম্ভব।
হামিদা খাতুনের লাগানো জাতের চারাগুলো বাংলাদেশের আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারে।
কাউনিয়ায় এটিই প্রথম আপেলের বাগান।
এখানে দুই বছর বয়সে গাছে ফুল ও ফল এসেছে। আশা করা যায় গাছগুলোর পরিণত বয়সে ফলন আরও বৃদ্ধি পাবে।
তিনি বলেন, আপেলের বাগান এ অঞ্চলে বেশি বেশি করা গেলে, একদিকে কৃষক যেমন লাভবান হবেন, তেমনি বিদেশি ফলের চাহিদাও মিটবে আসবে অর্থনৈতিক উন্নতি।