বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী শহীদের রক্তস্নাত সংগঠন, বাংলার ছাত্রসমাজের আস্থার ঠিকানা বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আসন্ন অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’এ আক্রান্ত মানুষের পাশে দাঁড়াবে।
অতীতে বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়কালীন সময়ে, শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করে, অগ্নিকাণ্ড বা ভবন ধসে উদ্ধারকাজ চালিয়ে, মহামারী করোনাকালীন সময়ে অসহায়-অসুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে, কৃষকের ধান কেটে নিরাপদে ঘরে পৌঁছে দিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সমাজ ও মানুষের প্রতি তাঁর কর্তব্য নিষ্ঠার সাথে পালন করেছে।
সম্প্রতি বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’এ রূপ নিয়েছে যা অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় বা সুপারসাইক্লোনে রূপ নেবার আশঙ্কা রয়েছে। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের উপকূলবর্তী এলাকাসহ মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরের জন্য ৭ নম্বর এবং চট্রগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরের জন্য ৬ নম্বর বিপদ সংকেত জারি করেছে। ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাগর দ্বীপের মাঝামাঝি স্থানে অবস্থান করছে। ২৬ শে মে গভীর রাতে কিংবা ২৭ শে মে ভোরের মধ্যে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা, পটুয়াখালী, বরগুনা সহ উপকূলবর্তী এলাকায় তীব্রভাবে আঘাত হানবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আঘাত হানার সময় এর কেন্দ্রের গতিবেগ ঘন্টায় ১৩০ কিলোমিটার হতে পারে। এছাড়াও এ ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সারা দেশব্যাপী অতি ভারী বৃষ্টি, প্রবল দুর্যোগ, বজ্রবৃষ্টি এবং সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরিশাল, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সহ উপকূলীয় অঞ্চলে জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হতে পারে। প্রবল বৃষ্টির ফলে ভূমিধস হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ঘূর্ণিঝড় প্রবণ এলাকার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে, সচেতনতামূলক প্রচারণা চালিয়ে, মাইকিং করে, শুকনো ও রান্না করা খাবার, খাবার স্যালাইন ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করে, ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী উদ্ধারকাজ পরিচালনা করে, ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ঘরবাড়ি স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে সংস্কার করে, শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করে এবং স্থানীয় প্রশাসন কর্তৃক গৃহীত কার্যক্রমে সহযোগীতা প্রদান করে পাশে থাকার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রার অগ্রদূত, পরিবেশ বিষয়ক সর্বোচ্চ বৈশ্বিক পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়নস অব দ্য আর্থ’ এ ভূষিত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ বৈশ্বিক রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। দুর্যোগে পূর্বপ্রস্তুতি গ্রহণ, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে প্রাণহানি কমিয়ে আনা, আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ, দুর্যোগে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যন্ত্রপাতি সংগ্রহ, বজ্রপাত নিরোধক কর্মসূচি, গৃহহীনদের জন্য দুর্যোগ সহনীয় গৃহ নির্মাণ, সময়োপযোগী আইন প্রণয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগজনিত ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসের ওপর গুরুত্বারোপ করে ‘বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০’ প্রণয়ন ইত্যাদি কর্মকাণ্ড বাংলাদেশকে দুর্যোগসহনশীল রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলেছে। যার ফলে জাতিসংঘ কর্তৃক বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ‘জনসেবা পদক’ লাভ করেছে।
রাষ্ট্র গঠন আন্দোলন থেকে শুরু করে শিক্ষার অধিকার এবং দেশমাতৃকার প্রতিটি প্রয়োজনে ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের যে গৌরবান্বিত ইতিহাস মানবতার সেবায় আত্মনিয়োগের মাধ্যমে তা আরও মহিমান্বিত হবে, এটিই আমাদের সংকল্প। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।