মো. সাখাওয়াত হোসেন, ফরিদপুর
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্ন করায় স্থানীয় দুই সাংবাদিককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে লাঞ্ছিত করেছেন অরুণ চন্দ্র দত্ত নামের এক শিক্ষক। তিনি ভাঙ্গা পৌরশহরে অবস্থিত কাজী শামসুন্নেছা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
সোমবার (২০ম) বিকেল আনুমানিক সারে ৩টায় ঐ স্কুলে সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে লাঞ্ছিত হন স্থানীয় সংবাদকর্মী আক্তারুজ্জামান সোহেল বারী ও লিয়াকত হোসেন। এ সময় প্রধান শিক্ষক অরুণ চন্দ্র তাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং তাদের সাথে থাকা ক্যামেরা ভাঙ্চুর করতে উদিত হন এবং কক্ষ থেকে সাংবাদিকদের বের করে দেন।
সংবাদকর্মীদের সঙ্গে তার খারাপ আচরণের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুহুর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সাংবাদিকবৃন্দ এবং সুশীল সমাজ। ভিডিওতে দেখা যায়, প্রধান শিক্ষক অরুণ চন্দ্র কক্ষে প্রবেশের পর তার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্যের বিষয়ে জানতে চান ঐ দুই সংবাদকর্মী। সাথে সাথে অরুণ চন্দ্র সংবাদকর্মীদের উদ্দেশ্যে অকথ্য গালিগালাজ শুরু করেন।
এ সময় এক সাংবাদিক প্রধান শিক্ষককে বলেন, আপনি ভদ্র ভাষায় কথা বলুন। আপনি একজন প্রধান শিক্ষক, আপনার ভাষা এমন হওয়া উচিৎ নয়। এ সময় প্রধান শিক্ষকের কক্ষে থাকা অন্যান্য শিক্ষকরা সেই সংবাদকর্মীদের বাইরে নিয়ে আসেন। এ ব্যাপারে ভাঙ্গার ইউএনওর কাছে অভিযোগ জানানোর কথা বললে স্কুলের মধ্যেই বহিরাগত অজ্ঞাত কিছু লোক সাংবাদিকদের ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালায় এবং তাদের ধাওয়া দেয়। পরে দুই সংবাদকর্মী স্কুল থেকে বেরিয়ে আসেন।
এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঘটনাটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ জানিয়েছেন এবং সংশ্লিষ্ট থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন বলে নিশ্চিত করেন লাঞ্ছিত হওয়া সংবাদকর্মী আক্তারুজ্জামান।
তিনি আরও বলেন, প্রধান শিক্ষক অরুণ চন্দ্রের বিরুদ্ধে মোটা অংকের উপঢৌকনের বিনিময়ে সম্প্রতি ওই বিদ্যালয়ে পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োগের অভিযোগ আছে। এছাড়া ওই বিদ্যালয়ে একটি বহুতল ভবন নির্মাণের বিষয়েও অনিয়ম দুর্নীতির তথ্য পাই। এসব বিষয়ে তথ্য সংগ্রহকালে তার বক্তব্য চাইতে গেলে তিনি আমাদের দেখা মাত্রই ক্ষিপ্ত হয়ে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন যা ভিডিও চিত্র দেখলেই প্রমাণ পাওয়া যাবে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে প্রধান শিক্ষক অরুণ চন্দ্র দত্তের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ভিডিওর বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। এ বিষয়ে ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)র কাছে বিস্তারিত জানাবেন বলে জানান।
এঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বি.এম.কুদরত- এ-খুদা সাংবাদিক দের বলেন, তদন্ত করে ঘটনার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।