শফিক রাসেল :
দিনকে দিন আমাদের নৈতিকতার চরম অবনতি ঘটতেছে।আমরা বলি দেশ ডিজিটাল হয়েছে উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে, তবে একথা কনে অনস্বীকার্য। বাঙালি জাতি হিসেবে আমরা উন্নত ও আধুনিকতার জোয়ার গা ভাসিয়ে সামাজিক মূল্যবোধের স্থান থেকে নিজেকে নিকৃষ্টতম স্থানে নিয়ে যাচ্ছি প্রতিনিয়ত।
প্রথমেই আসি আমরা যুবসমাজ প্রতিনিয়ত নেশায় আসক্ত হয়ে যাচ্ছি ছেলে অথবা মেয়ে। ভুলেছি আমরা শিক্ষা ব্যবস্থার কথা,যে আমাকে লেখাপড়া করে মানুষ হতে হবে, ব্যবসা বা চাকরি যে যেই কর্মই করি না কেন? সেই কর্ম করে নিজেকে ও পরিবারকে সুরক্ষিত রাখবো এবং দেশ ও জাতিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাব। কিন্তু কোথায় সেই চিন্তা ধারা আমাদের?
কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় আমরা স্কুল জীবন থেকেই অধিকাংশ যুবক-যুবতী নেশায় জড়িয়ে পড়তেছি।
পোশাক পরিচ্ছেদে এসেছে পশ্চিমা ও ভারতীয় সাংস্কৃতির নামে নোংরামি।কোন বাবা মা ই চায় না তার সন্তান বিপথগামী হোক সাংস্কৃতির নামে বেহাল্লাপনা করুক।
এমনিতেই দেশের শিক্ষাব্যবস্থার করুন পরিণতি। আমরা গণমাধ্যম বা সোশ্যাল মাধ্যমে দেখলাম একজন আপুর, এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর তার অভিব্যক্তি। আমি কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এর বিরুদ্ধে বলছি না। আমি আমার সন্তানকে নিয়েও শঙ্কিত, তাহলে আপনারা আপনাদের সন্তানকে নিয়ে কি শংকিত নয় , বলবো অবশ্যই স্বীকার করেন আর নাই করেন।
শিক্ষা ব্যবস্থা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে আমাদের যুব সমাজ বা আমাদের সন্তানরা সেই হাওয়াতে গা ভাসিয়ে যুব সমাজ স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীরা প্রতিনিয়ত জড়িয়ে যাচ্ছি নেশা, প্রেমের নামে দেহ ভোগ বিলাস, গ্যাং গ্রুপ তৈরি, বিভিন্ন দলীয় গ্রুপিং, টেন্ডার বাজি কার্যকলাপ ইত্যাদিতে।
তাহলে আমার বা আপনার বাবা অক্লান্ত পরিশ্রম করে মাঠে-ঘাটে অফিস আদালতে যে শ্রমটা দিয়ে যে টাকা উপার্জন করতেছে, তা খরচ করতেছে তার সন্তানকে বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যায়ন করানোর জন্য। কিন্তু তার সোনার সন্তানরা কি করতেছে? আমরা কোন বাবার সে খবর কি রেখেছি, রাখিনি এটাই সত্য। সোশ্যাল মিডিয়া ঘুরে আসি তাহলে বুঝতে পারব আমাদের নতুন প্রজন্ম আমাদের জন্য কি উপহার দিতে যাচ্ছে!
এই সন্তানটাই কোন না কোন ভাবে চাকরি বা ব্যবসা করবে। কিন্তু তার ভিত্তি তো দুর্বল, সে সামাজিক মূল্যবোধে শিক্ষিত হয়নি বা বেড়ে ওঠেনি।
আয় করতে হবে সন্তান স্ত্রী ও নিজের জন্য করতেছে করবে কিন্তু তার শেকর কে আজ আর চেনে না, সেই বাবা,মা তাদের ই বোঝা হয়ে গেছে।
যার প্রমাণ এখন আমরা সন্তানরা কর্মক্ষেত্রে এসে নিজ স্ত্রী সন্তান নিয়েই ছোট পরিবার গড়তে যাচ্ছি যেখানে সেই দেহের রক্ত পানি করা মানুষটাদের স্থান নেই।
এমন ও শুনেছি ছেলে থাকে গুলশান বনানী বসুন্ধারা মত জায়গায় আলিশান বাসায় অপরদিকে মা-বাবার জন্য একটু খোঁজ নেওয়ার সময় হয় না তাদের।
আধুনিকতার নতুন ছোঁয়ায়, এসেছে বৃদ্ধাশ্রম। আমাদের সন্তানরা তাদের বাবা মাকে সেখানে রাখতেই মনে হয় বেশি পছন্দ করে কেননা কিছুদিন আগে যাত্রাবাড়ি ফ্লাইওভারের নিচে রাতের দিকে, আমাদের সূর্যসন্তানরা তার মাকে গাড়ি থেকে ছুড়ে ফেলে দিয়ে গেছে।
বৃদ্ধ বাবা মা যারা সজ্জাসাই বা হাটাচলা করতে অক্ষম, সেই সকল বাবা মায়ের সন্তানদের কাছে আজ বোঝা। আমি তাদেরকে বোঝা বলবো না, আমি বলব আমাদের সন্তানরা মনে করে যে তারা হচ্ছে কোন পণ্য ইউজ করার পরে সেটাযখন অকার্যকর হয়ে যায় তাকে তখন আমরা ডাস্টবিনে ফেলে দিয়ে আসি।
হায়রে যুব সমাজ, হায়রে আমাদের সামাজিক মূল্যবোধ কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে?
তাই বলবো আমি যখন সন্তান, আমারও একদিন সন্তান হবে। আমি আমার মাতা পিতার সাথে যেমন ব্যবহারটা করব, ঠিক আমার সন্তানও আমার সাথে তেমন ব্যবহারটাই ফেরত দিবে।
এটা এখানে স্পষ্ট যে আমাদের কালচারে আজ বৃদ্ধাশ্রম নামক চার দেয়ালে বন্দীশালাকেই আমার মা-বাবার জন্য গুড হাউস হিসাবে বেছে নিয়েছি। কারণ আমাদের কারো তো কোনো সময় নেই, তাদের দেখভাল করার মত।
তবে একটা কথা কি আমি আমার বাবা মাকে বৃদ্ধাশ্রমে দিয়ে আসলাম বা রাস্তায় ফেলে আসলাম কিন্তু আমার সন্তান ও যে আমাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসবে না আমার অক্ষমতার সময় তার কি কোন গ্যারান্টি আছে।
নেই! নেই! নেই!
মূল্যবোধ কি অনলাইন প্লাটফর্মে কিনতে পাওয়া যায় নাকি ছোট থেকে নিজেকে মূল্যবোধ এর শিক্ষা গ্রহণ করতে হয়।
সম্পাদকীয় ও বাণিজিক কার্যালয়: ব্লক: ই, সেক্টর: ১৫, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০
নিউজ রুম মোবাইল: +৮৮০ ১৬১৯৮৭৭১৫৭, ইমেইল: news@hotnews24.news
সম্পাদক ইমেইল: editor@hotnews24.news, বিশেষ প্রয়োজনে: hotnewslive24@gmail.com
কপিরাইট ©2006-2024 hotnews24.news