নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
জাতীয় পার্টিকে আবার দুর্বল করার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলের উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের। তিনি বলেছেন, ‘রাজনীতিতে বন্ধুত্বের হাত বাড়াতে পারি। বন্ধু হয়ে রাজনীতি করতে পারি। জাতীয় পার্টি কারও নিয়ন্ত্রণে রাজনীতি করবে না। কারও গোলামি করবে না।’
শনিবার দুপুরে জামালপুরের মির্জা আজম অডিটরিয়ামে জেলা জাতীয় পার্টির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জি এম কাদের। সম্মেলনে জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক মোস্তফা আল মাহমুদকে সভাপতি ও সদস্যসচিব মো. জাকির হোসেন খানকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।
জি এম কাদের বলেন, ‘দুর্নীতি, দুঃশাসন, লুটপাট ও হাওয়া ভবন চাইনি বলেই ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিয়েছিলাম। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গিয়ে আমাদের দলে বিভেদ সৃষ্টি করতে চেয়েছে। আমাদের দুর্বল করতে চেয়েছে। তাই ২০০১ সালের নির্বাচনে আমরা আওয়ামী লীগকে সমর্থন করিনি। আবার দেশের রাজনীতির স্বার্থে, গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত করতে এবং দলবাজি, টেন্ডারবাজি ও চাঁদাবাজি রোধ করতে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিয়েছিলাম।’
এক বছর আগেও আমাদের ৪৮ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ ছিল। খরচ করার কারণে রিজার্ভ এখন ২৭ বিলিয়নে দাঁড়িয়েছে। আগামী বছর থেকে সুদ ও আসল হিসেবে বিদেশি ঋণ পরিশোধ করতে হবে ২২ বিলিয়ন। রিজার্ভের টাকা লুটপাট করা হয়েছে। তাই আগামী বছর থেকে দেশ মারাত্মক অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে পারে।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় গিয়ে ২০০৮ সালের পর থেকে প্রথমে জাতীয় পার্টিকে অঙ্গসংগঠন বানাতে চেয়েছে। এরপর তারা আমাদের চাকর বানাতে চেয়েছে। এখন রাজনীতিতে আমাদের কৃতদাস বানাতে চাচ্ছে। আমরা কারও কৃতদাস হতে রাজনীতি করছি না। আমরা দেশ ও দেশের মানুষের মুক্তির জন্য রাজনীতি করছি।’
জাতীয় পার্টিকে আবার দুর্বল করার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে জি এম কাদের বলেন, ‘লোভ-লালসা দিয়ে আমাদের মধ্যে দালাল সৃষ্টি করতে চেষ্টা চলছে। অত্যাচার-অবিচার শুরু হয়েছে আমাদের বিরুদ্ধে। আমরা কোনো অত্যাচারে মাথা নত করব না। দেশের মানুষ আমাদের বিশ্বাস করে। কোনো জুলুম-নির্যাতন আমাদের লক্ষ্যচ্যুত করতে পারবে না।’
দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে দেশ শ্রীলঙ্কার পথে হাঁটছে দাবি করেন জাপা চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘ব্যর্থ রাষ্ট্র হতে চলছে দেশ। আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক ও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক আমাদের ঋণ দিতে চাচ্ছে না। কারণ, আমাদের রিজার্ভের হিসাবে গরমিল আছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এক বছর আগেও আমাদের ৪৮ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ ছিল। খরচ করার কারণে রিজার্ভ এখন ২৭ বিলিয়নে দাঁড়িয়েছে। আগামী বছর থেকে সুদ ও আসল হিসেবে বিদেশি ঋণ পরিশোধ করতে হবে ২২ বিলিয়ন। রিজার্ভের টাকা লুটপাট করা হয়েছে। তাই আগামী বছর থেকে দেশ মারাত্মক অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে পারে।’
সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য ফখরুল ইমাম, শামীম হায়দার পাটোয়ারী প্রমুখ।