যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু মঙ্গলবার ঢাকায় আসছেন। এ সফরে তিনি ব্যবসা-বিনিয়োগ, নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তনসহ দুই দেশের অগ্রাধিকারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন। কূটনৈতিক সূত্র বলছে, সফরের প্রথম দিন রাতে লু প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের নৈশভোজে যোগ দেবেন। দ্বিতীয় দিন বুধবার লু প্রথমে পরিবেশ মন্ত্রী ও পরে পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করবেন। এরপর পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। এছাড়া ডোনাল্ড লু নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও কথা বলবেন।
তবে কূটনৈতিক পাড়ার খবর, বিএনপির বিদেশ বিষয়ক কমিটির সদস্যরা গত ৩-৪ দিন দূতাবাসে বারবার ধর্না দিয়ে গেছেন যেন ডোনাল্ড লু’র সাথে একান্তে সাক্ষাতের একটু সুযোগ পাওয়া যায়। তবে দূতাবাস থেকে বিএনপিকে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। এমনকি বিদায়ী রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সাথেও দেখা হয়নি বিএনপির নেতাদের। পিটার হাসের ব্যক্তিগত কর্মকর্তারা আমীর খসরু এবং শামা ওবায়েদকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন হাসের সাথে দেখা হবে না, তিনি চরম ব্যস্ত। বিএনপির শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে পরিচিত পিটার হাসও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন এভাবে- এটা বিশ্বাসই করতে পারেননি দলের নেতারা। তারা তবুও নানাভাবে চেষ্টা করেছেন ডোনাল্ড লু’র সাথে অন্তত ৩০ মিনিটের জন্যও যদি সাক্ষাৎ পাওয়া যায়।
বিএনপি কার্যালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, ডোনাল্ড লু’র সাথে একান্ত সাক্ষাতের সুযোগ হলে মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধি খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানো, শেখ হাসিনা সরকারকে স্যাংশন দিয়ে নতুন করে নির্বাচনের চাপ প্রয়োগ, গণতন্ত্র, মানবাধিকার ইত্যাদি নিয়ে একটা প্রেজেন্টেশন দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। সে অনুসারে পর্যাপ্ত ম্যাটেরিয়েলও প্রস্তুত করেছিল বিএনপির কয়েকটি কমিটি। এজন্য খালেদা জিয়ার প্রেস সচিব মুশফিকুল ফজল আনসারীর নেতৃত্বাধীন বিএনপির যুক্তরাষ্ট্র শাখার লোকজনও প্রচুর চেষ্টা-তদ্বির চালিয়েছে। তবে শেষপর্যন্ত সবই ব্যর্থ হলো।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নির্বাচনে জয়লাভের পর অভিনন্দন বার্তাসহ চিঠি পাঠিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সেখানে তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভাবনা স্পষ্ট করেছেন। যা থেকে স্পষ্ট, যুক্তরাষ্ট্র এখন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে মনোযোগী। অংশীদারত্বের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার হিসেবে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা; অর্থনৈতিক উন্নয়ন; জলবায়ু পরিবর্তন ও জ্বালানি; বৈশ্বিক স্বাস্থ্য; মানবিক সহায়তা, বিশেষত রোহিঙ্গা সমস্যার মতো বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়েছে। তাই ডোনাল্ড লু’র ঢাকা সফর বহুমাত্রিক ও গুরুত্বপূর্ণ নিঃসন্দেহে।