সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য ৩৫ ও মুক্তিযোদ্ধা কোটাধারীদের জন্য ৩৭ বছর করতে চাকরিপ্রার্থীদের দেওয়া আল্টিমেটাম শেষ হচ্ছে আগামীকাল শনিবার (১১মে)।
কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হওয়ায় বৃহৎ সমাবেশ আহ্বান করেছেন চাকরিপ্রার্থীরা। শনিবার বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।
শুক্রবার (১০ মে) আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের গণমাধ্যম বিষয়ক সংগঠক খাদিজা খাতুন মুক্তা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা স্থায়ীভাবে বৃদ্ধির দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন করে আসছে চাকরিপ্রার্থী শিক্ষার্থীরা। সে ধারাবাহিকতায় দাবি বাস্তবায়নে শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে একটি বৃহৎ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এতে বগুড়া-৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বাবলু, যশোর-৬ আসনের সংসদ সদস্য মো. আজিজুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত থাকবেন বলে নিশ্চিত করেছেন। সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম।
এছাড়াও সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের (নাটোর-নওগাঁ) সংসদ সদস্য অ্যাড. কোহেলী কুদ্দুস মুক্তি, যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক শারমিন সুলতানা লিলি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক জিএস গোলাম রাব্বানী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক দুই সাধারণ সম্পাদক মো. ওমর শরীফ ও মোতাহার হোসেন প্রিন্স, ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসরাত অরচি, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল প্রমুখ।
চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদের মুখপাত্র ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুষদ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শরিফুল হাসান শুভ কালবেলাকে বলেন, আমরা চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী ৩৫ বছর চাই। সেই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ৩০ আগস্ট থেকে লাগাতার কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে সংসদ সদস্যদের পাশাপাশি ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা উপস্থিত থাকবেন। আমরা দাবি বাস্তবায়নে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সকল পর্যায়ে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা আজ থেকে ৩৩ বছর আগে ১৯৯১ সালে ২৭ বছর থেকে ৩০ বছরে উন্নীত করা হয়, যখন বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু ছিল ৫৭ বছর। বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়ে ৭৩ বছর। তাই চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধি করা যৌক্তিক।
এর আগে, সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ন্যূনতম ৩৫ বছর করতে অনুরোধ জানিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী মো. ফরহাদ হোসেনকে গত ২৯ এপ্রিল চিঠি দেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।
এতে শিক্ষামন্ত্রী লিখেছেন, বিশ্বের প্রায় ১৬২ টি দেশে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা কমপক্ষে ৩৫ বছর, তার মধ্যে কিছু দেশে তা উন্মুক্ত। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত পৃথিবীর সবচেয়ে জনবহুল দেশ হয়েও বিভিন্ন রাজ্যভেদে চাকরিতে আবেদনের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৪৫ বছর, মালদ্বীপে ৪৫ বছর, শ্রীলঙ্কায় ৪৫ বছর, নেপালে ৩৫ বছর, আফগানিস্তানে ৩৫ বছর।
চিঠিতে শিক্ষামন্ত্রী লিখেন, ভারত সহ বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্রগুলো অনেক গবেষণা করেই চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে ন্যূনতম ৩৫ বছর করেছে। বিপুল সংখ্যক শিক্ষিত যুবসমাজকে মানবসম্পদ হিসেবে কাজে লাগাতে পারলে সেটি হবে যুগোপযোগী ও যুগান্তকারী একটি সিদ্ধান্ত এবং স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে কয়েক ধাপ অগ্রসর হওয়া যাবে।