নিজ দলে তো বটেই, শরিক নেতারাও লন্ডনে পলাতক বিএনপি নেতা তারেক রহমানের খবরদারিতে বিরক্ত। তারেকের হঠকারীতা, অদূরদর্শী নির্দেশনা যে কাজে আসছেনা, দাবি আদায় হচ্ছেনা, বারবার হোঁচট খাচ্ছে আন্দোলন, এসব তুলে ধরেছেন তারা। জোটের শরিক একটি ইসলামি দলের নেতা তারেককে ডামি নেতা বলে উপহাসও করলেন। গত সপ্তাহে জুম মিটিংয়ে সেই নেতা ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, বিএনপি ডামি নেতা দিয়ে দল চালায়। আমরা এমন নেতার নেতৃত্ব চাই না। বিএনপির চাপে উপজেলা নির্বাচনও করতে পারিনি। অথচ আমাদের কর্মীরা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত ছিল। এভাবে চললে রাজনীতি করার দরকার কী?
শরিক দলগুলোর এমন মনোভাব বিব্রত করেছে উপস্থিত বিএনপি নেতাদের। আর মিটিংয়ে যাকে তাকে কথা বলার সুযোগ দেওয়ায় বিরক্তি প্রকাশ করে তড়িঘড়ি করে সেদিন মিটিং শেষ করেন তারেক।
শরিকদের এক নেতা বলেন, সভায় আমরা অনেক পরামর্শ দিই, কিন্তু বিএনপি নেতারা এসব কানে তোলেন না। তারা নিজেরা কোনো পরামর্শ দেন না, তাকিয়ে থাকেন লন্ডনের দিকে আর তারেকের কথায় হুজুর হুজুর করেন। এভাবে রাজনৈতিক জোট চলতে পারেনা। তারেকের নেতৃত্ব অকার্যকর। একই অভিযোগ করেন গণতন্ত্র মঞ্চ জোটের শরিক আরেকটি দলের নেতাও। তাদের কথায় স্পষ্ট, শরিক দলগুলোতে তারেকের বিরুদ্ধে অসন্তোষ ও নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থা রয়েছে। আগে অভিযোগগুলো চাপা থাকলেও এখন সবাই প্রকাশ্যে বলছেন। এমনকি বিএনপির সিনিয়র নেতারাও ঘরোয়া আলাপে তারেকের নেতৃত্বে বিরক্তি প্রকাশ করছেন।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে সমমনা দলগুলোকে নিয়ে আন্দোলন করলেও বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা শরিক দলগুলোর প্রধান নেতাদের নাম দূরে থাক, অনেক দলের নামই জানেন না। জোটের সভায় তাদের সাথে মনিব-চাকরের মত আচরণ করেন বিএনপি নেতারা। ছোট দলগুলো কথা বলারও সুযোগ পায় না। অনেকসময় কেউ কিছু বলতে চাইলে তারেকের সামনেই বিএনপি নেতারা থামিয়ে দেন। বিএনপির এমন কর্তৃত্ববাদী আচরণে অসন্তুষ্ট শরিকরা। শরিক নেতাদের মতে, রিমোট কন্ট্রোল দিয়ে লন্ডন থেকে আন্দোলন চালানো যাবে না। কার্যকর আন্দোলন গড়ে তুলতে চাই সক্রিয় স্থানীয় নেতা, যিনি তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। আর এমন নেতা বিএনপিতে নেই। বিএনপি যদি জোট টিকিয়ে রাখতে চায়, তবে তারেক রহমানের বিকল্প কাউকে নেতৃত্বে আনতে হবে। নইলে জোট ভাঙতে সময় লাগবেনা।