বিএনপির রাজনীতিতে খালেদা জিয়ার কদর ফুরিয়েছে বহুদিন আগেই। দন্ডিত অপরাধী খালেদা নামেমাত্র চেয়ারপারসন হলেও দল চলছে তার দন্ডিত পলাতক পুত্র তারেকের নির্দেশে। খালেদা জিয়া বিএনপিতে শোপিস হিসেবে পদ অলংকৃত করে রেখেছেন মাত্র। গত ৩০শে এপ্রিল রাতে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন খালেদা। আবার ২ তারিখ রাতে ফেরেন বাসভবন ফিরোজায়। এরইমধ্যে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে কিছু তথ্য।
দলীয় নেতারা জানান, হঠাৎ শারীরিক জটিলতা দেখা দেওয়ায় ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের পরামর্শে খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। তবে পারিবারিক সূত্র বলছে, খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠাতে নতুন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। যার অংশ হিসাবে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য। সূত্রের দাবি, খালেদা জিয়ার স্থায়ী মুক্তির জন্য সরকারের সাথে দর কষাকষি চলছে। যেকোনো মূল্যে খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে যেতে চায় পরিবার। বিশেষত খালেদার ছোটভাই শামীম এস্কান্দার এ নিয়ে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করছেন। এছাড়া ছোট পুত্রবধূ শর্মিলা সিঁথিও শাশুড়িকে লন্ডনে নিজের কাছে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তাই খালেদা জিয়ার শরীরের সর্বশেষ অবস্থা জানতেই হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
খালেদা জিয়া হাসপাতাল থেকে ফেরার পর পারিবারিক বৈঠক বসে। পরিবারের সদস্যরা চান খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠাতে আইনানুযায়ী মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে যেন ক্ষমার আবেদন করা হয়। সকল অপরাধ স্বীকার করে ক্ষমা চাইলে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ক্ষমা করে দিতে পারেন, আইন মন্ত্রণালয়ের একটি দায়িত্বশীল সূত্র খালেদার পরিবারকে এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন বলে বৈঠকে উল্লেখ করা হয়। পরিবারের সদস্যদের মতে, রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা ভিক্ষায় অসম্মানের কিছু নেই। এ নিয়ে পারিবারিক আলোচনা হয় গতকাল। এদিকে বিএনপির কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা খালেদা জিয়ার আপোসকামিতার বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছেন। এতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে বলে মত তাদের। যদিও পরিবারের সদস্যরা খালেদার বিদেশ যাত্রার ব্যাপারে দলের আপত্তি কানে তুলছেন না। প্রয়োজনে সরকারের যেকোনো শর্ত মানতে রাজি তারা।
পরিবারের সদস্যদের মতে, খালেদা জিয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী, জনগণ এটা মনে রাখবে। তিনি চিকিৎসার জন্য বিদেশে গেলে, সন্তান ও স্বজনদের মাঝে থাকলে দলের নেতা-কর্মীদের আপত্তির কিছু নেই। রাজনীতিতে অনেক কিছু দিয়েছেন খালেদা, এখন তার বিশ্রামের প্রয়োজন। তাছাড়া তিনি চাইলেও এই বয়সে রাজনীতিতে ফিরতে পারবেন না। বরং বিদেশে চলে গেলে নেতা-কর্মীরা অলআউট আন্দোলনে নামতে পারবে। সরকারও খালেদাকে পুনরায় কারাগারে নেওয়ার ভয় দেখিয়ে বিএনপিকে দমিয়ে রাখতে পারবেনা।
তবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির কয়েকজন নেতা খালেদা জিয়ার পারিবারিক সিদ্ধান্তের বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছেন। তারা বলছেন, রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়া মানে সব অপরাধ স্বীকার করে নেওয়া। খালেদা জিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত দুর্নীতিবাজ প্রমাণিত হবেন। এতে বিএনপির রাজনীতি চিরতরে ধ্বংস হয়ে যাবে। তাছাড়া তারেকও চান না তার মা অপরাধ স্বীকার করেন। রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা ভিক্ষার তীব্র বিরোধী তারেক। এ নিয়ে মামা শামীম এস্কান্দারের সাথে ভাগিনা তারেকের তীব্র মতবিরোধ চলছে। তবে পরিবারের দাবি, খালেদা জিয়া বিদেশ যেতে সবকিছু করতে প্রস্তুত। এখন ভবিষ্যতই বলবে খালেদার ভাগ্যে কী আছে!