ইসরাইলের হত্যাযজ্ঞ নিয়ে কেনো বিএনপি সোচ্চার নয়, তার আরেকটি প্রমাণ উঠে এলো সম্প্রতি প্রকাশিত মার্কিন টেক জায়েন্ট মেটার ফেসবুক প্রতিবেদনে। সম্প্রতি মেটার প্রকাশিত প্রতিবেদনে 'বিএনপির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ' নিয়ে পোস্ট করাসহ বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণা ও কার্যক্রম পরিচালনার জন্য 'আওয়ামী লীগপন্থী' ফেসবুক পেজ ও অ্যাকাউন্ট বন্ধে করে দেয়ার কথা জানানো হয়েছে। যদিও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তার পরিবারের সদস্য এবং আওয়ামী লীগ নিয়ে বিএনপি ও সমমনা গোষ্ঠীগুলোর অপপ্রচার এবং বিএনপির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে একাধিকবার মিথ্যা তথ্য পরিবেশনা করা হলেও সে বিষয়ে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি মেটা।
মেটার প্রতিবেদনে বলা হয়, 'বিএনপির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ' নিয়ে পোস্ট করা সহ এমন বেশ কিছু কার্যক্রমের কারণে তারা এই পেজ ও অ্যাকাউন্টগুলো বন্ধ করে দিয়েছে। যদিও গণমাধ্যম প্রতিবেদন এবং বিএনপির সময়কার সরকারি বিভিন্ন নথি ও সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে বেশ স্পষ্টভাবেই জানা যায়, ক্ষমতায় থাকাকালে বিএনপি সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে দুর্নীতি হয়েছে। এ বিষয়ে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই এর দুই কর্মকর্তাও বাংলাদেশকে সাক্ষ্য প্রদান করেছে যেখান থেকে জানা যায়, বেগম খালেদা জিয়ার ছেলে ও বাংলাদেশের পলাতক আসামি তারেক রহমান ও কোকো দেশের বড় দুর্ণীতিগুলোতে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছিলো।
এই পেজগুলো বন্ধ করার জন্য মেটার পক্ষ থেকে আরও যেই দুটি অভিযোগ আরোপ করা হয় তার মধ্যে একটি হলো 'বিএনপির সমালোচনা' এবং 'নির্বাচন পুর্ববর্তী সময়ে বিএনপির বিরুদ্ধে সহিংসতার অভিযোগ'। সবচাইতে আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, আওয়ামী লীগের সমালোচনা ও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধেও একই ধরণের অভিযোগ বিএনপির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ সহ সংশ্লিষ্ট আরও অনেক ফেসবুক পেজ ও অ্যাকাউন্ট থেকে করা হলেও সে বিষয়েও মেটার কোন বক্তব্য নেই।
গণমাধ্যমের একাধিক প্রতিবেদনে বিএনপি কর্তৃক গুজব, অপপ্রচার ও জনমনে বিভ্রান্তি তৈরির একাধিক কার্যক্রমের বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হলেও সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি মেটা। একই সঙ্গে ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বেশ স্পষ্টভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে ফেসবুক, ইউটিউব ও টুইটারে অপপ্রচারের বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলেও সে বিষয়টিও আমলে নেয়নি ফেসবুকের কর্তৃপক্ষ মেটা। বরং এখনও ফেসবুক কেন্দ্রিক বিভিন্ন অপপ্রচার অব্যহত রেখেছি বিএনপি। ফেসবুকের পক্ষপাতিত্বও পাওয়া যায় এনডিআই সমীক্ষায়। সেখানে দেখা গেছে যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সর্বাধিক পরিমাণে অপপ্রচার করা হয়েছে। কিন্তু এই বিষয়ে কোন তথ্যই নেই মেটার 'নিজস্ব তদন্ত' ভিত্তিক প্রতিবেদনে।
২০১৩ সাল থেকেই আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিএনপি-জামায়াত ও তাদের অঙ্গ সংগঠনগুলোর গুজব, মিথ্যা তথ্য প্রচার ও বিভ্রান্তিকর বার্তা প্রেরণের একাধিক ঘটনা ঘটলেও প্রথমবারের মতো বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে এভাবে প্রতিবেদন প্রদান করলো মেটা। এর কারণ হিসেবে মূলত বাংলাদেশের সরকারের ইসরাইল বিরোধী অবস্থান ও ফিলিস্তিনের প্রতি পূর্ণ সমর্থনকে দেখা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশাপাশি ফিলিস্তিনের গণহত্যার বিরোধিতা করে পোস্ট করছে দেশের অধিকাংশ মানুষ। আর এ কারণেই অনেকের ওপরই নেমে এসেছে ফেসবুকের সাসপেন্ড, ব্যান বা শাস্তির খড়গ। অনেকের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার বন্ধা রাখা হয়েছে প্রায় ৩ দিন থেকে ৩ মাস পর্যন্ত। কারো কারো অ্যাকাউন্ট একেবারেই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি ছাত্রলীগ যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে দেশে ফিলিস্তিনের পক্ষে সর্ববৃহৎ শিক্ষার্থী র্যালি ও মানববন্ধনের আয়োজন করে।
কিন্তু আওয়ামী লীগের বিপরীতে বিএনপিকে দেখা যায় ইসরাইল ফিলিস্তিন ইস্যুতে একেবারেই নিরব ভূমিকায় থাকতে। দলটির পক্ষ থেকে এই হামলা বন্ধ করার জন্য কোন বিবৃতি, সমাবেশ বা আয়োজনও করা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে দেশের অভ্যন্তরে বিএনপি সমালোচনার মুখে পড়লেও নিরব অবস্থানে থাকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে। আর ঠিক তারপরই মেটার পক্ষ থেকে বিএনপির দুর্নীতি ও নির্বাচন পূর্ববর্তী সহিংসতার বিষয়ে এভাবে প্রতিবেদন দাখিল করলো মেটা। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি সরকারে চাপ প্রদান না করলেও মার্কিন প্রতিষ্ঠান মেটার মাধ্যমে চাপ প্রদান করতে একটি পথ তৈরি করা হয়েছে এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে।
সম্পাদকীয় ও বাণিজিক কার্যালয়: ব্লক: ই, সেক্টর: ১৫, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০
নিউজ রুম মোবাইল: +৮৮০ ১৬১৯৮৭৭১৫৭, ইমেইল: news@hotnews24.news
সম্পাদক ইমেইল: editor@hotnews24.news, বিশেষ প্রয়োজনে: hotnewslive24@gmail.com
কপিরাইট ©2006-2024 hotnews24.news