জেলা প্রতিনিধি, পটুয়াখালী
বিশ্ববিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে পেশাগত দায়িত্ব পালন বাদ দিয়ে সালিশ মিমাংসায় ব্যাস্ত সময় পার করছেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-রেজিস্টার মোঃ শফিকুল ইসলাম। জেলার ৩১নং ধনখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সদস্য নির্বাচনে তিনি প্রভাব বিস্তার করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এডহক কমিটি গঠন নিয়ে তার অপেশাদার আচরণের কারণে এলাকায় বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।
রবিবার (০২ নভেম্বর) সকালে সদর উপজেলার ইটিবাড়িয়া ইউনিয়নের ৩১নং ধনখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির জমিদাতা সদস্য নির্বাচন নিয়ে মতবিরোধের কারনে তদন্ত কর্মকর্তাদের স্থানীয়দের সাথে কথোপকথন হচ্ছে। উক্ত বৈঠকে মোঃ শফিকুল ইসলাম নিজেকে পবিপ্রবির রেজিস্ট্রার হিসেবে দাবি করেন এবং জমিদাতা ওয়ারিশ সোহাগের পক্ষে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করেন। তার উপস্থিতে এলাকায় বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে গণমাধ্যমকর্মীরা তার কাছে আগমনের উদ্যেশ্য জানতে চাইলে সে প্রচন্ড ক্ষিপ্ত হয়ে যান এবং সাংবাদিকদের দেখে নেয়ার হুমকি দেন।
এসময় তিনি বলেন, আমি একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র অফিসার আপনি জিজ্ঞেস করেন আমি এখানে কেন আসছি এটা কোনো প্রশ্ন হলো? আমি আমার শশুর বাড়ির এলাকায় আসছি। এখানের ডিসি সাহেব আমার বন্ধু মানুষ, আমার লেভেল সম্পর্কে এখানের সবার জানা উচিৎ। এখানের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আমার বন্ধু, ওনাদের(তদন্ত কর্মকর্তা) বস। তুমি কি বিশ্ববিদ্যালয়ের হেমায়েত জাহানকে চেনো প্রো-ভিসি? তুমি তার কাছে জিজ্ঞেস কইরো আমার কথা, আমি কে?
মোঃ শফিকুল ইসলামের বিষয়ে জানতে চাইলে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এস. এম. হেমায়েত জাহান বলেন, তিনি কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অথবা কোনো ধরনের ছুটি ছাড়াই তিনি এখানে গিয়েছেন। আর তিনি বিনা ছুটিতে সেখানে গিয়ে যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদের প্রভাব খাটিয়ে বেক্তিগত অথবা কারো পক্ষ নিয়ে এধরণের কর্মকাণ্ড করে থাকে তাহলে অবশ্যই এটা নিন্দনীয় কাজ। এই বিশ্ব বিদ্যালয়ের সুনাম, সুখ্যাতি যদি কেউ বেক্তিগত কারনে নষ্ট করতে চায় অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অপর দিকে বিদ্যালয়ের জমিদাতা সদস্য লতিফ হাওলাদার নাতি মেহেদী হাসান শিবলী বলেন, এই স্কুলের এডহক কমিটির জমিদাতা সদস্য নিয়ে দীর্ঘদিন পর্যন্ত একটি মতবিরোধ হয়ে আসছিলো। তাই আজ উপজেলা শিক্ষা অফিরের পক্ষ থেকে দুইজন তদন্ত কর্মকর্তা আসেন। ওখানে শফিকুল ইসলাম নামে এক বেক্তি এসে দুমকি ভার্সিটির রেজিস্ট্রার হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেন এবং তিনি বলেন এখানে যারা এসেছে তদের বস আমার বন্ধু। তিনি মুলত এখানে এসেছেন প্রভাব বিস্তার করতে, আর সেটা তিনি করেছেনও। এমন পরিস্থিতিতে এই তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে আমরা শংকিত, ধারনা করছি আমরা ন্যায্য অধিকারটুকু পাবো না।
এমন ঘটনার বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা ও সদর উপজেলার সহকারী শিক্ষা অফিসার মো: রাজ্জাক হোসাইন বলেন, আমরা আমাদের মতো করে তথ্য সংগ্রহ করেছি। জমিদাতাদের পক্ষ থেকে বলেছেন আগামী বৃহস্পতিবার তারা আবারও বসবেন বিদ্যালয়ের জমি বুজিয়ে দেয়ার জন্য। আর ওই ভদ্রলোক এসেছিলেন আলোচনা শুনয়ে তিনি পরিচয় দিয়েছে তিনি পবিপ্রবির রেজিস্ট্রার এবং সোহাগ আকনের ভগ্নিপতি। এখানে আমাদের প্রভাবিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই, আমরা তদন্তের স্বার্থে তথ্য সংগ্রহ করেছি৷ এখন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্যার স্বীদ্ধান্ত নিবেন।
এ বিষয়ে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, তিনি ছুটি ছাড়া সেখানে যেতে পারবেন না। তিনি কোথাও গেলে অবশ্যই তাকে ছুটি নিয়ে যেতে হবে, এটা হচ্ছে সরকারি নিয়ম। এর ব্যত্যয় ঘটলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনত ব্যাবস্থা নেয়া হবে।