জসিনুর রহমান, নিলফামারী
জলঢাকায় একটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নিয়োগ পরিক্ষায় জালিয়াতি,অব্যবস্থাপনা, বৈষম্য ও দাতা সদস্যদের মূল্যয়ন না করার অভিযোগে এলাকাবাসী ও চাকুরী প্রত্যাশীদের উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে নিয়োগ পরিক্ষা স্থগিত করতে বাধ্য হয় প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আশরাফুল আলম ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি তহিদুল ইসলাম । ৩১শে মে শুক্রবার উপজেলার কৈমারী ইউনিয়নের গাবরোল তহশিলদার পাড়া দ্বী-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ডিজি'র প্রতিনিধি, ডিসি'র প্রতিনিধি, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, অত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি / সদস্যসহ গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। অভিযোগ উঠেছে উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আশরাফুল আলম চাকুরী প্রত্যাশী প্রার্থীদের নিকট আর্থিক সুবিধা নিয়ে নিয়োগ পরিক্ষার দিন কৌশলে নিজের অর্পিত দ্বায়িত্ব সহকারী শিক্ষক কার্তিক চন্দ্র রায়কে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব প্রদান করে নিজে অনেকটা দ্বায়মুক্তির অন্তরালে থেকে সব কিছুই নিয়ন্ত্রণে মোক্ষম ভূমিকা রেখেছেন। ফলে এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়ে শেষমেশ বাধ্য হয়ে সকল পরিক্ষা স্থগিত করতে বাধ্য হয় । প্রাপ্য তথ্য অনুযায়ী উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে ৬টি পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয় অনেক আগ থেকেই। অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে শুক্রবার ৬টি পদে বিদ্যালয় হলরুমে পরিক্ষা হওয়ার কথা। সে অনুযায়ী ৬টি পদে আবেদনকারী প্রার্থীরা পরিক্ষা দিতে সকাল ৮টায় অত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। পদ ৬টি হচ্ছে, প্রধান শিক্ষক, অফিস সহকারী, অফিস সহায়ক, নিরাপত্তা কর্মী, নৈশ্য প্রহরী ও আয়া। কিন্তূ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির কৌশলগত কারণে পরিকল্পিত ভাবে ৪টি পদে নিয়োগ পরিক্ষা শুরু করে এবং দুটি পদে আবেদনকারীদের পরিক্ষা পরে হবে বলে জানিয়ে দেয়। এতেই ঘটে যায় হিতে বিপরীত। এ সময় অত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দাতা সদস্য ফয়জুল ইসলামের পুত্র নিয়োগ পরিক্ষায় আবেদনকারী মনিরুজ্জামান ( ২৪ ) পরিক্ষার হলরুমের দরজায় গিয়ে পরিক্ষা বন্ধের দাবীতে অশ্রুসিক্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পরেন। তৎক্ষনাৎ তার পরিবারের লোকজন সহ এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। এ সময় বিদ্যালয় মাঠে চরম থমথমে ও উত্তেজনা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। জানা যায়, বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি তহিদুল ইসলামের আপন ভাতিজা এই মনিরুজ্জামান। অন্যদিকে চাকুরী প্রত্যাশী মনিরুজ্জামান জানান, আমি আবেদন করেছিলাম অফিস সহায়ক পদে। কিন্তূ নিয়োগ পরিক্ষার দিন আমাকে অফিস সহায়ক পদে পরিক্ষা সুযোগ না দিয়ে কৌশলে আমাকে নৈশ্য প্রহরী পদের জন্য পরিক্ষা দিতে বলে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। এটা কত বড় জালিয়াতি ও অব্যবস্থাপনা বলেন। এ সময় ওই চাকুরী প্রত্যাশী ও তার পরিবারবর্গ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে উপস্থিত হয়ে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ করলে এলাকাবাসী তাদের কথায় একমত পোষণ করে এই অব্যবস্থাপনা, জালিয়াতি, বৈষম্য ও আর্থিক সুবিধা নেওয়া নিয়োগ পরিক্ষা স্থগিত করার আহবান জানান। এমন পরিস্থিতিতে ডিজির প্রতিনিধিরা দ্রুত বিদ্যালয় ত্যাগ করে। এ বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি তহিদুল ইসলাম গণমাধ্যমে জানান, সব ঠিকঠাকই ছিল। আমার ভাতিজা নৈশ্য প্রহরী পদেই আবেদন করেছিল। সে অনুযায়ী তাকে ওই পদেই পরিক্ষা দেওয়ার জন্য প্রবেশ পত্র দেয়া হয়েছিল। কিন্তূ আজ আমার ভাতিজা অন্যের কুমন্ত্রণা ধরে অফিস সহায়ক পদ দাবী করছে। যার প্রমাণ তার কাছে নেই। অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কার্তিক চন্দ্র রায় জানান, আমাকে শুধু আজ নিয়োগ পরিক্ষা প্রদানের জন্য ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সব কিছুই প্রধান শিক্ষক করেছে। আমি অতটা জানি না। এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার চঞ্চল কুমার ভৌমিক যুগের আলোকে জানান, ডিজির প্রতিনিধি ও ডিসির প্রতিনিধির সঙ্গে আমিও জাস্ট পরিক্ষা ও দেখভালের দায়িত্বে এসেছি। এমন পরিস্থিতিতে প্রতিষ্ঠান প্রধান ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিই স্বীদ্ধান্ত নিতে পারে পরিক্ষা স্থগিত করবে কি না। পরে উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে অনিবার্য কারণ দেখিয়ে পরিক্ষা বন্ধের নোটিশ দেয়ালো প্রদর্শন করে উক্ত নিয়োগ পরিক্ষা স্থগিত করতে বাধ্য হয় প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আশরাফুল আলম ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি তহিদুল ইসলাম।
সম্পাদকীয় ও বাণিজিক কার্যালয়: ব্লক: ই, সেক্টর: ১৫, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০
নিউজ রুম মোবাইল: +৮৮০ ১৬১৯৮৭৭১৫৭, ইমেইল: news@hotnews24.news
সম্পাদক ইমেইল: editor@hotnews24.news, বিশেষ প্রয়োজনে: hotnewslive24@gmail.com
কপিরাইট ©2006-2024 hotnews24.news