ফরিদপুরের ভাঙ্গায় কাজী শামসুন্নেছা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সমালোচিত সেই প্রধান শিক্ষক অরুণ চন্দ্র দত্তের বিরুদ্ধে সেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ সংক্রান্ত তথ্য চাওয়ায় দুই সংবাদকর্মীর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করার জন্য কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেছেন ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। আগামী ০৫ (পাঁচ) কার্যদিবসের মধ্যে অত্র দপ্তরে তাকে লিখিতভাবে কারণ দর্শানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়।
বৃহষ্পতিবার (২৩ মে) সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিএম কুদরত-এ-খুদা।
সূত্রে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক অরুণ চন্দ্র দত্ত স্থানীয় দুই সংবাদ কর্মীর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। তাঁর এহেন আচরনের জন্য কারণ দর্শনোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। বৃহষ্পতিবার (২৩মে) থেকে আগামী ০৫ (পাঁচ) কার্যদিবসের মধ্যে অত্র দপ্তরে লিখিত জবাব চাওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে বিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রধান শিক্ষক অরুণ চন্দ্র দত্তের বিরুদ্ধে নোটিশে বলা হয়েছে অরুণ চন্দ্র দত্ত, প্রধান শিক্ষক, কাজী শামসুন্নেছা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ভাঙ্গা ফরিদপুর। আপনার নিকট গণমাধ্যমকর্মী সংবাদ সংগ্রহের জন্য তথ্য প্রদানের অনুরোধ করলে আপনি তাদেরকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন যা ভিডিও ফুটেজ এবং বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে জানা যায়।
আপনার এ ধরনের আচরণে কাজী শামসুন্নেছা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষক মন্ডলীর ভাবমূর্তী ক্ষুন্ন হয়েছে।
আপনার এহেন আচরণ অসদাচরণ বলে প্রতীয়মান হয়। এমতাবস্থায় আপনার বিরুদ্ধে কেন বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হবে না তা আগামী ০৫ (পাঁচ) কার্যদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে নিম্ন স্বাক্ষরকারীর দপ্তরে দাখিল করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
নোটিশ প্রাপ্তির বিষয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক অরুণ চন্দ্র দত্তের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তাঁর বিরুদ্ধে হওয়া কোন নোটিশ তিনি পাননি। তিনি জরুরী কাজে ব্যস্ত রয়েছেন জানিয়ে মোবাইলের সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেন।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. জালাল উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, একজন শিক্ষকের আচরণ হতে হবে শিক্ষক সূলভ কিন্তু, প্রধান শিক্ষক অরুণ চন্দ্র দত্তের আচরণ শিক্ষক সূলভ আচরণ হয়নি। তার আচরণের জন্য তাকে কারণ দর্শনোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত (২০ মে) বিকেলে প্রধান শিক্ষক অরুণ চন্দ দত্তের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য জানতে চাওয়ায় দুই সংবাদকর্মীকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও হেনস্থা করা হয়। এ ঘটনার একটি ভিডিও সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরে ওই দিন রাতেই ভাঙ্গা থানায় প্রধান শিক্ষক অরুণ চন্দ্র দত্তের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করে ভাঙ্গা থানায় আরও একটি লিখিত অভিযোগ দেন মো. আক্তারুজ্জামান।
এরপর দিন (২১ মে) ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক ও উপ-পরিচালক দুর্নীতি দমন কমিশন ফরিদপুর বরাবর প্রধান শিক্ষক অরুণ চন্দ্র দত্তের বিরুদ্ধে সেচ্ছাচারিতা, পরিচ্ছন্নকর্মী নিয়োগে অনিয়মসহ ব্যাপক দুর্নীতি প্রসঙ্গে লিখিত অভিযোগপত্র দিয়েছেন হেনস্তার শিকার সাংবাদিক আক্তারুজ্জামান সোহেল।