পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার উপকূলীয় অঞ্চলে চায়না দুয়ারী নামের বিশেষ ধরনের ফাঁদ জাল ব্যবহার করে নির্বিচারে মাছ শিকার করা হচ্ছে। এই জালের সহজলভ্যতা ও কম খরচের কারণে স্থানীয় জেলেদের মধ্যে এর ব্যবহারের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। ফলে দেশি মাছের প্রজাতি দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে, যা ভবিষ্যতে মাছের প্রজনন ও জীববৈচিত্র্যে মারাত্মক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিভিন্ন ইউনিয়নের ছোটো খাল ও জলাশয়ে চায়না দুয়ারী দিয়ে মাছ ধরার জন্য স্থানীয়রা সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে যখন মাছের প্রজনন হয়, তখন এই জালের ব্যবহার আরো বৃদ্ধি পায়। এই জালের ফাঁদে শুধু দেশি মাছই নয়, বরং বিভিন্ন জলজ প্রাণী এবং মাছের ডিমও ছেঁকে উঠে। স্থানীয় জেলেরা জানান, চায়না দুয়ারী দিয়ে মাছ ধরা সহজ ও লাভজনক হলেও, এতে প্রাকৃতিক পরিবেশ ও মাছের প্রজাতির ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে।
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জানিয়েছেন, মৎস্য অধিদপ্তরের সুরক্ষা আইন ১৫০ এর ধারায় এই জাল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করে চায়না দুয়ারীর ব্যবহার শূন্য কোঠায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: রবিউল ইসলামও জানান, চায়না দুয়ারী বন্ধে একাধিক অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে এবং এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। তবে, জেলেদের জীবন-জীবিকার তাগিদে অনেকেই এই জাল ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা রহিম বলেন, বিকেল হলেই চায়না দুয়ারী নদীতে ফেলা হয় এবং সকালে তুলে আনা হয়। এর ফলে খুব দ্রুত মাছের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে, যা পরিবেশ ও দেশের মাছের সম্পদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
এ পরিস্থিতিতে সরকারের উচিত দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা, যাতে চায়না দুয়ারীর ব্যবহার বন্ধ করে দেশের মাছের সম্পদকে রক্ষা করা যায়। দেশের জলজ জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ সুরক্ষায় এটি একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ হতে পারে।