মোঃ সামিরুজ্জামান, বিশেষ প্রতিনিধি
পটুয়াখালী জেলার ২১ জন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পলাতক রয়েছেন, যা স্থানীয় নাগরিকদের জন্য নানা ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গ্রামীণ জনগণের দাবি, সরকারি সেবা নিতে গিয়ে তারা বিভিন্ন বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন, যার মধ্যে জন্ম সনদ, মৃত্যু নিবন্ধন এবং ট্রেড লাইসেন্সসহ অন্যান্য সনদ পাওয়া অন্তর্ভুক্ত।
স্থানীয় বাসিন্দা জব্বার মৃধা বলেন, “শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর চেয়ারম্যানরা পালিয়ে গেছেন। তাদের সঠিক অবস্থান কেউ জানে না।” তিনি গত তিন দিন ধরে আউলিয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। অন্যদিকে, জেলার ৭৭টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে ২১টি চেয়ারম্যান পলাতক থাকার কারণে পরিষদের কার্যক্রম অচল হয়ে পড়েছে।
জানা গেছে, পলাতক চেয়ারম্যানদের ইউনিয়নগুলোতে সাধারণ জনগণকে সেবা প্রদান করতে এসিল্যান্ড ও প্যানেল চেয়ারম্যানদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ব্যস্ততার কারণে তারা নিয়মিত পরিষদে উপস্থিত হতে পারছেন না। ফলে নাগরিকদের জন্য সেবা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে।
মরিচবুনিয়া ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, চেয়ারম্যান মো. মাসুম মৃধা অনুপস্থিত। তার দায়িত্ব পালন করছেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। কিন্তু স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, ইউএনওর সরকারি কাজের চাপ থাকায় তিনি নিয়মিত পরিষদে আসতে পারেন না। ফলে বহু মানুষ পরিষদের ভবনে বসে কর্মকর্তার অপেক্ষায় রয়েছেন।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইফফাত আরা জামান উর্মি বলেন, “সদর উপজেলার চারজন চেয়ারম্যান অনিয়মিত ছিলেন। তাদের মধ্যে তিন ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মরিচবুনিয়া ইউপির সদস্যদের আভ্যন্তরীণ সমস্যা রয়েছে, তাই আমি সেখানে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছি।”
পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালক জুয়েল রানা বলেন, “রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণে চেয়ারম্যানরা আত্মগোপনে রয়েছেন। তবে নাগরিক সেবার ক্ষেত্রে সমস্যা হওয়ার কথা নয়, কিন্তু প্রশাসনের কর্মকর্তারা নিয়মিত পরিষদে বসতে পারছেন না, তাই কিছু সমস্যা হচ্ছে।”
পলাতক চেয়ারম্যানদের কারণে পটুয়াখালীর নাগরিকদের জন্য সেবা পেতে ভোগান্তি কাটানোর জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে। স্থানীয় প্রশাসনকে সচেতন হতে এবং জনগণের জন্য সঠিক সেবা নিশ্চিত করতে হবে।