মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়ায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এর গুলিতে স্বর্ণা দাস (১৪) নামের অষ্টম শ্রেণির স্কুল ছাত্রী কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে। রোববার (১লা সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের লালারচক সীমান্ত ঘেষা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তবে তা জানাজানি হয় সোমবার (২রা সেপ্টেম্বর) রাতে।
নিহত স্বর্ণা জেলার জুড়ী উপজেলার পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের কালনীগড় গ্রামের পরেন্দ্র দাসের মেয়ে। স্বর্ণা একই উপজেলার নিরোদ বিহারী উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
স্বর্ণার বাবা পরেন্দ্র দাস জানান, ভারতের ত্রিপুরায় তাঁর বড় ছেলে ও নিকট আত্মীয়রা বসবাস করেন। তাদের সঙ্গে দেখা করতে স্বর্ণা ও তার মা রোববার রাতে স্থানীয় দুই দালালের সহযোগিতায় লালারচক সীমান্ত দিয়ে অবৈধপথে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করেন। রাত ৯টার দিকে ভারতের সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়ার কাছে পৌঁছালে বিএসএফ তাদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চুড়ে, সেই গুলিতে স্বর্ণা ঘটনাস্থলে মারা যান। তখন স্বর্ণার মা প্রান নিয়ে পালিয়ে যেতে পারেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মদন মোহন দাস গনমাধ্যমকে জানান, সোমবার রাতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) পরিচয়ে মোবাইল কলের মাধ্যমে তাঁকে জানানো হয় স্বর্ণার মৃত্যুর খবর। স্বর্ণার মরদেহ ভারতীয় সেনাবাহিনী বিএসএফ নিয়ে গেছে বলেও জানান তিনি।
মদন মোহন দাস আরও বলেন, স্বর্ণার মামা ভারতে বসবাস করেন। তাঁর সঙ্গে দেখা স্বর্ণা ও তার মা দেখা করতে ভারতের সীমান্ত এলাকায় যায়। এই কাজের জন্য দালালচক্র পাঁচ হাজার টাকা নেয়। দালালরা রাতের বেলায় সীমান্ত এলাকায় তাদের নিয়ে বসিয়ে রাখে। এরই মাঝে ভারতীয় সীমান্ত বাহিনী বিএসএফ এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। ঘটনাস্থলেই স্বর্ণার মৃত্যু হয়।
নিরোদ বিহারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মৃনাল কান্তি দাশ জানান, ‘স্বর্ণা খুবই মেধাবী ছিল। বিদ্যালয়ে খেলাধুলাসহ সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সে জড়িত থাকত।’
কুলাউড়া থানার ওসি বিনয় ভূষন রায় ঘটনার সততা নিশ্চিত করে জানান, নিহত স্বর্ণার মরদেহ ভারতে রয়েছে।
মেয়ের মরদেহ দ্রুত পাওয়ার দাবি জানিয়ে স্বর্ণার বাবা পরেন্দ্র দাস বলেন, ‘মেয়ে মারা গেছে এখন কোনো ঝামেলা ছাড়াই মরদেহ পেতে চাই।