গোপাল হালদার, পটুয়াখালী
পটুয়াখালীর চৌরাস্তায় আজ সকালে অল্প সংখ্যক শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের সদস্যরা ইসলামী ছাত্র শিবির, যুবদল, বিএনপি-জামাতের নেতৃত্বে একটি অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন যা পরে হিংসাত্মক রূপ নেয়। সরকার পদত্যাগের দাবিতে শুরু হওয়া এই কর্মসূচি দিনের শেষে উত্তেজনা সৃষ্টি করে, যার ফলে একজন সাংবাদিক আহত হন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল ১০টা থেকে আন্দোলনকারীরা শহরের প্রধান চৌরাস্তায় জমায়েত হতে শুরু করে এবং দ্রুত পটুয়াখালী-কুয়াকাটা, পটুয়াখালী-মির্জাগঞ্জ, পটুয়াখালী-বরিশাল এবং পটুয়াখালী সদরের সাথে সংযোগকারী প্রধান সড়কগুলি অবরুদ্ধ করে ফেলে। এতে শহরের যানবাহন চলাচল কিছুটা স্তব্ধ হয়ে পড়ে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আন্দোলনকারীরা হাতে লাঠি, রড ও বিভিন্ন ধরনের দেশি অস্ত্র নিয়ে সরকারবিরোধী স্লোগান দিতে থাকে। তাদের প্রধান দাবি ছিল বর্তমান সরকারের পদত্যাগ। সকাল ১১টার দিকে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং আন্দোলনকারীদের একটি অংশ পটুয়াখালী চৌরাস্তার পুলিশ বক্সে হামলা চালায়। এই সময়ে পুলিশ নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে।
হামলার সময় ৭১ টিভির সাংবাদিক আহসানুল কবির রিপন ভিডিও সংগ্রহ করার সময় হামলার শিকার হন। তিনি ঘটনাস্থল থেকে লাইভ রিপোর্টিং করছিলেন। স্থানীয় হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, রিপনের মাথায় আঘাত লেগেছে এবং তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সুপার মোঃ আব্দুস সালাম জানিয়েছেন, “আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছি। জনসাধারণের নিরাপত্তা আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। যারা আইন ভঙ্গ করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অন্যদিকে, বিরোধী দলের নেতারা বলছেন, “সরকার জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করছে। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি, এত বড় জমায়েতে কিছু সমস্যা হতেই পারে।”
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে শহরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় প্রশাসন জরুরি বৈঠকে বসেছে এবং পরিস্থিতি মোকাবেলায় কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আগামীকাল সকাল পর্যন্ত শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দ উভয় পক্ষকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অধিকার থাকলেও তা অবশ্যই শান্তিপূর্ণ হওয়া উচিত। একইসাথে সরকারকেও নাগরিকদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে।