সাইবার যুদ্ধে আওয়ামী লীগের শোচনীয় পরাজয় কেন?

ডেস্ক রিপোর্ট

এখন ষড়যন্ত্র এবং আন্দোলনের দু’টি অংশ হচ্ছে। একটি দৃশ্যমান অংশ যেটি মাঠে হচ্ছে। সরকার পতনের লক্ষ্যে কোটা সংস্কার আন্দোলনের ওপর ভর করে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, পেশাদার সন্ত্রাসীরা এক জোট হয়ে দেশে নাশকতা সৃষ্টি করেছে। একটি ভয়ংকর পরিস্থিতির সৃষ্টির চেষ্টা করে সরকারকে হটানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিলো। অন্যটি সাইবার জগতে বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

ভার্চুয়াল দুনিয়ায় একটি দৃশ্য ছিলো যেই দৃশ্যে সরকারকে নানাভাবে অপপ্রচারের শিকার হতে হয়েছে। এই ঘটনাগুলোকে বিকৃত করে, অপ-তথ্য প্রকাশ করে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক মহলকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে। সরকার মাঠের আন্দোলনকে দমন করে মোটামুটি স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে পেরেছে। বিশেষ করে সেনা মোতায়নের পর আস্তে আস্তে পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। সাধারণ মানুষও যে হত্যা, বিভীষিকা এবং তাণ্ডব হয়েছে তা নিয়ে বিস্মৃত এবং হতবাক। তারা এধরনের পরিস্থিতিকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপরাধ বলেই মনে করছেন।

এই যুদ্ধে দৃশ্যতই সরকার বিজয়ী হয়েছে এবং সুবিধাজনক অবস্থায় আছে। সাধারণ মানুষ আর যাই হোক, এই ধরনের ভাঙচুর, বিশেষ করে মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, সেতু ভবনের মতো অতিগুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো ভাঙচুরকে সমর্থন করেনি। তারা এই আন্দোলন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। কিন্তু আন্দোলনের তথ্যগুলো আমাদের মূল ধারার টেলিভিশন বা সংবাদপত্রে যেভাবে আসছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসছে তার উল্টোভাবে। কিছুদিন ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকার কারণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষ যেতে পারেনি। কিন্তু সাইবার যুদ্ধে বিএনপি-জামায়াত, বিশেষ করে যুদ্ধাপরাধী গোষ্ঠী বিশ্বব্যাপী তাদের অপপ্রচার অব্যাহত রেখেছে। আর একারণেই আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশ সম্পর্কে ভুল, বিভ্রান্তিকর তথ্যগুলো ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিতও হয়েছে। আর এই যুদ্ধে আওয়ামী লীগ শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়েছে। এখন যখন ইন্টারনেট খুলে দেয়া হয়েছে, গতকাল থেকে ইউটিউব চালু হয়েছে তখন দেখা গেছে ইন্টারনেট জগত পুরোটা বিএনপি-জামায়াতের। বিশেষ করে যুদ্ধাপরাধী গোষ্ঠীরদের দখলে। সেখানে এমন সব আজগুবি, বিভ্রান্তিকর তথ্য পরিবেশন করা হচ্ছে যা কল্পনারও অতীত।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাড়ানো হয়েছে র‌্যাব নাকি হেলিকপ্টার থেকে গুলি করেছে। র‌্যাব কখনোই হেলিকপ্টারে করে গুলি করেনি। হেলিকপ্টার থেকে টহল দিয়েছে, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে, টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে। সেটিকে গুলিবর্ষণ হিসেবে চালিয়ে দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, পুলিশ নির্মমভাবে ছাত্রদের হত্যা করেছে। কিন্তু পুলিশ পিটুনি খেয়ে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাদে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলো। সেখান থেকে তাদেরকে উদ্ধার করা হয়। ছাত্রদের সাথে কোন ধরনের সহিংসতায় না জড়ানোর জন্য এবং রক্তপাত এড়ানোর জন্যই পুলিশ এ অবস্থান নিয়েছে। পুলিশের সহনশীলতার কারণেই এই আন্দোলনের সাথে যখন সন্ত্রাসীরা যুক্ত হন তখন আন্দোলন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিলো। অথচ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বীভৎস মিথ্যা এবং বিকৃত ছবি প্রচার করা হয়েছে। বিএনপি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রকাশ করেছে যা আসলে মিথ্যা এবং সেখানে অতীতের বিভিন্ন সন্ত্রাস, সহিংসতার ঘটনাকে জোড়া লাগিয়ে সেটি সাম্প্রতিক সময়ের সহিংসতা হিসেবে চালিয়ে দিয়েছে।

প্রশ্ন উঠেছে, আওয়ামী লীগ ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রবর্তক। ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে আওয়ামী লীগ ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলেছিল এবং আওয়ামী লীগের হাত ধরেই বাংলাদেশ আজ তথ্য প্রযুক্তিতে নীরব বিপ্লব করেছে। কিন্তু এই সাইবার যুদ্ধে কেন আওয়ামী লীগ শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়েছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী গর্ব করে বলেছিলেন, তার এক লাখ সাইবার যোদ্ধা মাঠে নামানো হয়েছে। সেই যোদ্ধারা এখন কোথায়? আওয়ামী লীগ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেন শোচনীয়ভাবে হেরে গেল? রাজনীতির কৌশলে এবং আন্দোলন দমনের ক্ষেত্রে সরকার যতোটা ভালো করেছে ঠিক ততটাই ব্যর্থ হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এর কারণ কী?

এর কারণ হলো, আওয়ামী লীগের নেতাদের আত্মতুষ্টি, অহংকার এবং তাদের এ ব্যাপারে মনোযোগী না হওয়া। সাইবার এই যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার কারণে সারা বিশ্বে বাংলাদেশ সম্পর্কে নানারকম নেতিবাচক তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে। আর একারণেই তথ্য প্রযুক্তির এই ক্ষেত্রটির দিকে নতুন করে নজর দিতে হবে। অপ-তথ্যে সয়লাব হয়ে যাওয়া বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নেতিবাচক তথ্য দিয়ে এক ধরনের আবহ সৃষ্টি করার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের সুস্পষ্ট অবস্থান নিতে হবে এখনই।

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Facebook
WhatsApp
Telegram
Twitter
LinkedIn
Email
Print

আরও পড়ুনঃ

অবৈধভাবে মনু নদীর তীরে মাটি কাটার দায়ে লাখ টাকা জরিমানা

তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি মৌলভীবাজারের কুলাউড়া

চর কুকরি মুকরিতে স্থানীয় পর্যটন উন্নয়নে কর্মশালা অনুষ্ঠিত

মো: সামিরুজ্জামান, বিশেষ প্রতিনিধ ভোলা জেলার চরফ্যাশন

কুকরি মুকরিতে টেকসই জীবিকা ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ে কর্মশালা অনুষ্ঠিত

মো: সামিরুজ্জামান, বিশেষ প্রতিনিধ ভোলা জেলার চরফ্যাশন

মালিক হত্যা মামলার দ্রুত বিচারের দাবিতে মৌলভীবাজারে স্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন

তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি মৌলভীবাজারের রাজনগরে

অবশেষে খাসি সম্প্রদায়ের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান প্রশাসনের সহায়তায় হচ্ছে

তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি খাসি সম্প্রদায়ের

ভোলার চর কুকরি মুকরিতে জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন নিয়ে কর্মশালা অনুষ্ঠিত

মো: সামিরুজ্জামান, বিশেষ প্রতিনিধ ভোলার চরফ্যাশন

মৌলভীবাজারের সন্তানের স্বপ্ন পূরণ হলো না! বেলারুশ সীমান্তে পিটিয়ে হত্যা

তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি স্বপ্ন পূরণে ইচ্ছা ছিল

মৌলভীবাজার পূজা উদযাপন পরিষদের সম্পাদক মহিম গ্রেপ্তার

তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি বৈষম্যবিরোধী মামলায়

প্রধান সংবাদ

মায়েদের উৎসাহিত করতে ভোলায় মা সমাবেশ

মোঃ সামিরুজ্জামান, বিশেষ প্রতিনিধি ভোলা সদর উপজেলার

ভোলায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য বিশেষায়িত প্রশিক্ষণের সমাপনি

মোঃ সামিরুজ্জামান, বিশেষ প্রতিনিধি ভোলায় প্রতিবন্ধী

কুয়াকাটায় এক ইলিশের দাম উঠলো প্রায় ৭ হাজার টাকা

উপজেলা প্রতিনিধি, কলাপাড়া(পটুয়াখালী) পটুয়াখালীর

উড়ছে বি এন পি নেতার খোলা চিঠি !

মোঃ রাওফুল বরাত বাঁধন ঢালী, লালমনিরহাট কুড়িগ্রাম জেলার

হাসিনার প্রসাশনিক এজেন্টরা ইউনূস সরকারকে সফলে বাঁধা;রিজভী

তিমির বনিক,মৌলভীবাজার বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব

জামায়াত ইসলামী বাংলাদেশ এর সমাবেশে মানুষের ঢ়ল

এম,এ,মান্নান, নিয়ামতপুর, নওগাঁ নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর

উপকূলে মাঝারি বৃষ্টিপাত, ০৩ নম্বর সতর্ক সংকেত বহাল

মৌসুমী বায়ুর সক্রিয় প্রভাবে পটুয়াখালীসহ উপকূলীয়