মো: সামিরুজ্জামান, বিশেষ প্রতিনিধ
বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় রাসেল ভাইপারের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে একটি নতুন সমস্যা দেখা দিয়েছে – নিরীহ ও উপকারী সাপের অকারণ হত্যা। সম্প্রতি পরিবেশবিদ ও বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা এই বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলায় গত সপ্তাহে অন্তত ৫০টি নিরীহ সাপ মারা গেছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। এর মধ্যে ঢোঁড়া সাপ, দাঁড়াশ, গাছ সাপসহ বেশ কয়েকটি প্রজাতির সাপ রয়েছে, যারা বাস্তুতন্ত্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এনিমাল লাভার্স অফ পটুয়াখালীর সদস্য আসাদুল্লাহ হাসান মুসা বলেন, “রাসেল ভাইপার নিঃসন্দেহে একটি বিপজ্জনক সাপ, কিন্তু এর আতঙ্কে সব সাপকেই মেরে ফেলা হচ্ছে। এটি পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। অনেক সাপই কৃষকের বন্ধু, যারা ক্ষেতের ইঁদুর নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।”
স্থানীয় কৃষকরা জানান, “আমরা এখন যেকোনো সাপ দেখলেই ভয় পাই। কিন্তু জানি না কোনটা আসল রাসেল ভাইপার আর কোনটা নয়। তাই সবাই মিলে যেকোনো সাপকেই মেরে ফেলছি।”
পরিবেশ অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “আমরা জনসচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা করছি। মানুষকে বোঝানো হচ্ছে যে সব সাপই বিষাক্ত নয় এবং অধিকাংশ সাপই পরিবেশের জন্য উপকারী।”
বিশেষজ্ঞরা সুপারিশ করছেন যে, সরকার ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর উচিত দ্রুত একটি সমন্বিত প্রচারণা শুরু করা, যাতে মানুষ সাপের প্রজাতি চিনতে পারে এবং শুধুমাত্র বিপজ্জনক সাপ থেকে সতর্ক থাকে।
এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়া হলে, বাংলাদেশের জৈব বৈচিত্র্য ও পরিবেশ ব্যবস্থা মারাত্মক হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়েছেন।