মোঃ আল আমিন ,মাধবপুর,হবিগঞ্জ
হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার চৌমুহনী ইউনিয়নের বেলাপুর গ্রামে মানিকের বাড়ি,পিতা মোঃতাহের মিয়া।মানিক বিয়ে করেছেন ২টি। বর্তমানে সে স্থায়ী ভাবে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে একই ইউনিয়নের আরিছপুর(বারইপাড়া) গ্রামে বসবাস করেন। প্রথম স্ত্রী বেলাপুর গ্রামের মানিকের পৈত্রিক ভিটাতে ছেলে মেয়ে নিয়ে বসবাস করেন। মানিক এক সময় মোটরসাইকেলে দিয়ে যাত্রী পারাপার করত।এরই আড়ালে একাধিক মাদক ব্যবসায়ী এবং চোরচক্রের সঙ্গে গড়ে তোলে গভীর সখ্যতা। দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে উপজেলার চৌমুহনী ইউনিয়নের আরিছপুর(বারইপাড়া) গ্রামে বসত ঘরের সামনে মার্কেট নির্মাণ করে এতে মুদি মালের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে বসে। এখানে একটি ছোট্ট দোকান থাকলেও মূলত চোরাই পণ্য বেচাকেনা এবং মাদক ব্যবসায়ই তাঁর মূল ব্যবসা।চোরাই পণ্য কেনাবেচার পাাপশি চড়া সুদে টাকা লগ্নি করেন মানিক। অনুসন্ধানে জানা যায়,কয়েক বছর আগে উপজেলার চৌমুহনী ইউনিয়নের বেলাপুর গ্রামের পৈত্রিক ভিটাতে ছোট্র একটি ঘরে কোন রকম দিনযাপন করত মানিক। হঠাৎ করে আরিছপুর (বারইপাড়া)গ্রামের শহীদ ঘটকের স্ত্রীকে বিয়ে করে সেখানে গড়ে তুলে আলিশান বাড়ি। সেখানেই দ্বিতীয় স্ত্রী ছেলে মেয়েকে নিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করে মানিক।বাড়ির চারদিকে সিসি ক্যামেরা বসিয়ে মোবাইলে ওনি পুলিশ আসা যাওয়া পর্যবেক্ষন করেন।জানা যায় প্রতি দিনই তার ঘরে বসে মাদকের আসর।স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন মানিক পেশাদার একজন চিহিৃত মাদক ব্যবসায়ী এবং চোরাই মালামাল কেনাবেচার সিন্ডিকেটের একজন সদস্য। ভারত থেকে ফেনসিডিল, গাঁজা ও ইয়াবা এনে পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করে। মাত্র ২-৩ বছরের মাথায় তিনি এখন কোটিপতি। কিনেছেন জমি করেছেন বাড়ি, বাড়িতে তুলেছেন অট্টালিকা। তার নেতৃত্বে এলাকায় গড়ে তুলে মাদক ব্যবসায়ী এবং চোরদের এক বিশাল সাম্রাজ্য।
এর আগে মানিককে একাধিকবার গ্রেপ্তার করে মাধবপুর থানা পুলিশ,রয়েছে ৭টি মাদক মামলা। ১১জুন মঙ্গলবার কাশিমনগর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই ফজলুল হকের নেতৃত্বে পুলিশ মানিকের বসত ঘরে অভিযান চালিয়ে চোরাই কাট(ফালংক) উদ্ধার করে। তার স্বীকারোক্তিতেই বেরিয়ে আসে চৌমুহনী ইউনিয়নের কমলানগর গ্রামের নাসির মিয়ার পুত্র শান্ত ওরুফে কাইল্লা এবং দুলাল মিয়ার পুত্র জীবন এর নাম। এরপর শান্ত এবং জীবন কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে গ্রেপ্তারকৃত জীবনের দেওয়া তথ্যমতে কমলানগর গ্রামের মাসুকের ঘর থেকে চুরি হয়ে যাওয়া মালামাল শান্ত ওরুফে কাইল্লার ঘর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। অদৃশ্য কারনে চোরাই মালামাল কেনাবেচার মূল হোতা মাদক ব্যবসায়ী মানিক রয়ে যায় ধরা ছুয়ার বাহিরে। ইতিমধ্যে কমলানগর গ্রামের মাসুকের ঘরে চুরি হওয়ার বিষয়ে মাধবপুর থানায় মাসুকের স্ত্রী শারমিন বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাত চোরদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। মানিকের ঘর থেকে মালামাল উদ্ধার হওয়ার পরও বুধবার (১২জুন)সকাল থেকে মানিক গ্রেপ্তার না হওয়া নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে আলোচনা সমালোচনা সৃষ্টি হলে মাধবপুর থানার ওসি রাকিবুল ইসলাম খান এর নির্দেশে বুধবার বিকেলে কাশিমনগর পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই দেলোয়ার হোসেন এর নেতৃত্বে পুলিশ মানিক মিয়াকে তার বাড়ি থেকে আটক করে।
মাধবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাকিবুল ইসলাম খান পিপিএম মানিক গ্রেপ্তারের খবর নিশ্চিত করে জানান,গ্রেপ্তারকৃত জীবন এবং শান্তকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। আর মানিক একজন মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরোদ্ধে ৭টি মাদক মামলা রয়েছে। তার বিরোদ্ধে চোরাই মালামাল কম দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে। তার বিরোদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।