চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত দেশের প্রথম অন্ডারওয়াটার টানেল ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’ চালুর প্রায় সাত মাস অতিক্রান্ত হলেও এখনও এর সামগ্রিক সুবিধা অপূর্ণ রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। টানেল চালুর পর যাত্রীদের যাতায়াত সময় কিছুটা সাশ্রয় হলেও টানেলসংশ্লিষ্ট সড়কগুলোর অপ্রশস্ততা এবং শহর সম্প্রসারণ ও শিল্পায়নের ঘাটতি সামগ্রিক উন্নয়নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু টানেল নির্মাণ করলেই চলবে না, তার সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক মইনুল ইসলাম বলেন, “টানেলের তখনই সম্পূর্ণ সুবিধা হবে, যখন চট্টগ্রামের মিরসরাই থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ নির্মাণ করা হবে এবং টানেলকেন্দ্রিক শিল্পায়ন হবে।”
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, শহর সম্প্রসারণ, শিল্পায়ন এবং টানেলের সঙ্গে কক্সবাজার-মাতারবাড়ীকে দ্রুত যুক্ত করার পাশাপাশি সড়ক সংযোগ প্রশস্তকরণ ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। তাহলেই টানেল নির্মাণের সামগ্রিক উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হবে।
অপরদিকে, প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই টানেলটির টোল আদায়ের আয়ও প্রত্যাশিত হচ্ছে না। সেতু কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, প্রত্যাশিত যানবাহন চলাচল না হওয়ায় টানেল থেকে দৈনিক গড়ে মাত্র ১১ লাখ ৮০ হাজার টাকা আয় হচ্ছে। আর টোল আদায় ও রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ দৈনিক গড়ে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৩৮ লাখ টাকা।
সরকার আশা করছে, কক্সবাজার ও মাতারবাড়ীকে টানেলের সাথে দ্রুত সংযোগ দেওয়ার পরই যানবাহন চলাচল বৃদ্ধি পাবে। তবে আয় বৃদ্ধির পরও চীনা ঋণের কিস্তি পরিশোধে রাজস্বখাত থেকে অর্থ দিতে হবে বলে জানা গেছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, টানেল কেবল যাতায়াতের সুবিধা নয়, তা অর্থনৈতিক উন্নয়নের রূপরেখাও পরিবর্তন করবে। তাই টানেলকেন্দ্রিক সামগ্রিক বিকাশ সুনিশ্চিত করতে হবে।