ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর গণহত্যার প্রতিবাদে ও ফিলিস্তিনের নিপীড়িত মুসলমানদের পাশে মানবিক সহায়তা নিয়ে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে কওমি মাদ্রাসা শিক্ষক পরিষদ। পাশাপাশি দেশ বিরোধী ও জাতি ধ্বংসে এনজিওদের অপতৎপরতা রোধে ব্যবস্থা নেওয়া এবং কোরবানির পশুর চামড়ার ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তির দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) এক সংবাদ সম্মেলনে ৭ দফা প্রস্তাবনা পেশ করা হয়। জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন কওমি মাদ্রাসা শিক্ষক পরিষদের সভাপতি মিজানুর রহমান চৌধুরী (পীর সাহেব দেওনা)।
তিনি বলেন, ১৯৪৮ সালে সম্পূর্ণ অন্যায় ও অবৈধভাবে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের ৭৭ ভাগ ভূমি জবরদখল করে আন্তর্জাতিক আইনকানুনের কোনো তোয়াক্কা না করে ইসরায়েল নামক একটি রাষ্ট্র গঠিত হয়। অবৈধভাবে গঠিত রাষ্ট্রটি ৭৬ বছর ধরে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি জনগণকে হত্যা, গুম, ধর্ষণ, কারাগারে বন্দি করাসহ নির্যাতন চালিয়ে আসছে এবং ক্রমাগত ফিলিস্তিনি ভূমি বেআইনীভাবে জবরদখল করে ফিলিস্তিনিদেরকে বাস্তচ্যুত করে আসছে। ফিলিস্তিনি জনগণ যেন ‘নিজ ভূমে পরবাসী’।
মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেন, গাজার মাত্র ৩৬০ বর্গ কিলোমিটারের ছোট্ট ভূখণ্ডে ২০ লক্ষাধিক মানুষের বসবাস যা অবৈধ ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী অবরুদ্ধ করে বর্হিবিশ্বের সঙ্গে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে, যাতে করে বাহির থেকে তাদের কাছে কোনো প্রকার ত্রাণসামগ্রী না পৌঁছে। উপরন্তু তাদের ওপর ক্রমাগত বোমা বর্ষণ ও গণহত্যা করে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, সস্প্রতি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব পাশ করলেও গাদ্দার ইসরায়েল কোনো তোয়াক্কা করে নাই এবং সব চুক্তি ভঙ্গ করে নিরীহ ফিলিস্তিনদের উপর দোষ চাপিয়েছে। তাদের এ ধরনের যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব ও চুক্তি আমেরিকার পাতানো সাজানো নাটক।
মিজানুর রহমান বলেন, সার্বিক বিবেচনায় ফিলিস্তিনি বিশেষভাবে গাজার বিষয়ে আমাদের প্রস্তাব হচ্ছে- (ক) গাজার মুসলমানদের জন্য আর্থিক সহায়তা করা। ‘কওমি মাদরাসা শিক্ষক পরিষদ’র দায়িত্বশীলদের কাছে অনুদান দেওয়া হলে তা বৈধ উপায়ে রাফায় পৌঁছানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। (খ) ইসরায়েলি বর্বরতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ অব্যাহত রাখতে হবে। (গ) সংবাদ মাধ্যমের প্রচারণা অব্যাহত রাখতে হবে। (ঘ) পুনর্গঠন ও পুনর্বাসনে সহায়তার লক্ষ্যে রাষ্ট্রীয় ও সংস্থা ভিত্তিক সহায়তা প্রদান করা। (ঙ) ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতির জন্য কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা। (চ) ইসরায়েলি পণ্য বর্জন করা এবং (ছ) ফিলিস্তিনির মুসলমানদের হেফাজত ও বিজয়ের জন্য দোয়া করা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- সংগঠনের সহসভাপতি মাওলানা জুবায়ের আহমদ, মুফতি ইকবাল, মহাসচিব মাওলানা মুস্তাকিম বিল্লাহ হামিদী, মুফতি ইমরানুল বারী সিরাজী, মাওলানা শুয়াইব আহমদ আশরাফী, মাওলানা মাজহারুল ইসলাম, মাওলানা ফয়জুল্লাহ, এনামুল হক আইয়ুবী, মাওলানা জালাল আহমদ, মাওলানা নাসির উদ্দিন, মাওলানা নজরুল ইসলাম, মাওলানা আবুল খায়ের ভৈরবী, শায়েখ ইসমাইল হোসাইন সাইফী, মুফতি মুয়াবিয়া আল হাবিবী, মুফতি রফি উদ্দীন মাহমুদ নুরী, মুফতি ওমর ফারুক যুক্তিবাদী, মুফতি খালিদ সাইফুল্লাহ নোমানী প্রমুখ।