জাহিদ হাসান সাব্বির, রাজশাহী
রাজশাহীর শান্তিবাগে জমি বিরোধীদের জেরে দুই পক্ষের ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দুই পক্ষের অভিযোগের পর আদালত চত্বর থেকে কারাগারে পাঠানো হয় ৯ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বাকে। আটক হওয়া সেই নারী শান্তিবাগের স্থায়ী বাসিন্দা হাসিনা নদী (২৯)।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ৩০ মে বিকাল ৫ টায় রাস্তার জন্য বরাদ্দ জমি ছাড়ার বিষয় নিয়ে প্রতিবেশী সুমন রেজা (৩৭), কেয়া খাতুন (৩২) ও নুরুল ইসলাম নূরের (৬০) সাথে বাক-বিতণ্ডায় জড়ায় ভুক্তভোগী অন্তঃসত্ত্বা নারী হাসিনা নদী (২৯)। একপর্যায়ে ঘটনাটি ইট পাটকেল নিক্ষেপের দিকে গেলে দুই পক্ষের একজন করে মোট দুইজন আহত হয়। আহত দুইজনের একজন ৭ বছরের শিশু আয়ান ও অন্যজন অন্তঃসত্ত্বা এই নারী।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানায়, দীর্ঘদিন থেকেই স্থানীয় কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান মনি বিষয়টি সুষ্ঠ তদন্ত করে অপরপক্ষ সুমন রেজা (৩৭) ও তার পরিবার দ্বারা দখলকৃত হাফ কাঠা জমির সীমানা প্রাচীর ভেঙে রাস্তা নির্মাণের তাগিদ দেয়। তবুও, সুমন রেজা (৩৭) ও তার পরিবারের সদস্যরা রাস্তার জন্য বরাদ্দ জমি বুঝিয়ে না দিয়ে উল্টো ঘটনাটি নিয়ে তালবাহানা করে। প্রায়ই বিষয়টি নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে বাক-বিতন্ডা লেগে থাকতো। তবে, গত ৩০মে এই ঘটনাটি বাক-বিতণ্ডার এক পর্যায়ে ইট পাটকেল নিক্ষেপের পর্যায়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা আরো জানায়, এ ঘটনায় দু-পক্ষের কেউই আটক না হলেও ভুক্তভোগী নয় সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা নারীকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। আমরা এলাকাবাসী হিসেবে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। ঘটনাটি সুষ্ঠু তদন্ত করে দুই পক্ষের আপস মীমাংসায় সমাধান করা অতিজরুরী।
এদিকে ঘটনার দিন উপস্থিত নদীর নিকটাত্মীয় জয়তা (২৫) জানায়, আমরা ঘটনার খবর পেয়ে নদীর বাসায় যেয়ে দেখি সে ইটের আঘাতে আহত হয়ে প্রাচীরের ধারে পড়ে আছে। এমন অবস্থায় আমি ও কয়েকজন প্রতিবেশী মিলে নদীকে হাসপাতালে নিয়ে যায়৷ এ ঘটনায় নদীর স্বামী সনি (৩৫) বাদী হয়ে থানায় একটি অভিযোগ দেয়৷ তবে, এরপর আমরা জানতে পারি ইট পাটকেল নিক্ষেপের সময় উচু দেয়ালের ঘেরাটোপ টপকে কে বা কার ছোড়া একটি ইটের টুকরো অপর পক্ষের শিশু আয়ানের ঠোটে গিয়ে লাগে। শিশুটির সেই আঘাতের সূত্র ধরে সুমন রেজা (৩৭) নদী (২৯) ও তার স্বামী সনি (৩৫) এর নামে থানায় অভিযোগ করে৷
তিনি আরো বলেন, মামলাটির জামিন নিতে নদী আদালত চত্বরে গেলে সেখানে নদীকে আটক করা হয় এবং জেল হাজতে প্রেরন করা হয়৷ মানুষ এমন অমানবিক কাজ কিভাবে করতে পারে। একজন অন্তস্বত্বা নারীকে সামান্য অপরাধে কারাগারে পাঠানো লাগে? এটি আসলেই একটি অমানবিক ঘটনা৷ আমরা গরীব আর অসহায় বলে টাকা ওয়ালা লোকদের কাছে হেরে গিয়ে নাজ্য বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছি।
অপরপক্ষের সুমন রেজা (৩৭) তার অভিযোগে, ৭ বছরের শিশুকে আহর করার বিষয়টি উল্লেখ্য করে মামলা দায়ের করে৷ আহত সেই শিশুর নাম আয়ান৷ তবে, সেই শিশু রামেকের ১ নং ওর্য়াডে চিকিৎসা নেওয়ার পর এখন সুস্থ আছে বলে জানা যায়৷