বুধবার (২৯মে) থেকে গণস্বাস্থ্যের অন্যতম প্রতিষ্ঠাকালীন ট্রাস্টি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. নাজিমুদ্দিন আহমেদের নির্দেশনায় ভোলা চরফ্যাশন দক্ষিণ আইচার বিভিন্ন বন্যা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় জরুরী স্বাস্থ্যসেবার অংশ হিসেবে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, ভেটেরিনারিয়ান স্বেচ্ছাসেবক দল অ্যাম্বুলেন্স, ঔষধ, স্বাস্থ্য সরঞ্জামাদি নিয়ে পৌঁছে যায় গণস্বাস্থ্য জরুরি ত্রাণ সহায়তা ও মেডিকেল টিম।
সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, এ ঘূর্ণিঝড়ে চরফ্যাশণ দক্ষিণ আইচার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ী মেডিকেল ক্যাম্পে হাজারের অধিক সাধারণ মানুষকে চিকিৎসা সহায়তা দেন মেডিকেল টিমের রেজিস্টার্ড ডাক্তারগণ। গণস্বাস্থ্যের জরিপে দেখা যায়, এখানে কয়েক হাজার পরিবার বাড়িঘর, জায়গা হারিয়ে ছিন্নমূল অবস্থায় রয়েছে। প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তার তথ্য অনুযায়ী চরফ্যাশন উপজেলায় ভেসে গেছে শত শত হাস মুরগী,গরু মহিষ ভেড়া ছাগল এবং তিন শতাধিক একর চারণভূমি ও মাছের ঘের সহ প্রায় ৫ হাজার পুকুর প্লাবিত হয়েছে।
ফ্রি চিকিৎসা পেয়ে ডাক্তারদের ধন্যবাদ জানিয়ে,ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বয়োবৃদ্ধ আজিজ মিয়া(৬০) ও হনুপা বেগম (৭৮) আবেগ আপ্লুত হয় বলেন এই মুহূর্তে “আমাদের সামর্থ ছিলো না হাসপাতালে যেয়ে চিকিৎসা করাবো এই বন্যা আমরা স্বয় সম্বল সবটুকু হারিয়েছি ,এবং ঝড় আর বন্যার লুনা পানিতে চুলকানিতে আমার সারা শরির ভরে গেছে। ডাক্তাররা আমাদের ফ্রি দেখ, ঔষধ দিলো আমরা গ্রামের সকলেই খুশি। গণস্বাস্থ্য এর সবার জন্য দুয়া করি।
ভোলা জেলা দায়িত্বে থাকা ক্যাম্প পরিচালক,নজরুল ইসলাম রলিফ বলেন এখানে অনেকেই ত্রাণ নিয়ে আসছে কিন্তু আমরাই প্রথম বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ঔষধ বিতরণ কর্মসূচি নিয়ে এসেছি দূর্যোগ কবলিত মানুষদের জন্য। তাদের মধ্যে দেখা গেছে অধিকাংশই শারীরিকভাবে দূর্বল, এলার্জিতে জ্বর সহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত ও শিশুরা অপুষ্টিতে ভুগছে।
এসময় মেডিকেল ক্যাম্পের সর্বাধিক খোঁজখবর রেখে সন্তুষ্টু প্রকাশ করেন চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী অফিসার,সিভিল সার্জন, এছাড়া গণস্বাস্থ্য এর কার্যক্রমকে সাধুবাদ জানান ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার চেয়ারম্যান মেম্বার ও জনপ্রতিনিধিরা,মেডিকেল টিমকে সর্বাধিক সহযোগিতায়,স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন টীম ঊষার আলো। ভোলা জেলার মেডিকেল ক্যাম্প পরিচলনা: করবেন নজরুল ইসলাম রলিফ, সহযোগিতায়: রনি আহমেদ ও আব্দুল হাকিম মুন্সি।
ক্যাম্প (১)’র দায়িত্বে ডাক্তার মেহফুজ,আইয়ুব আলী (গবি ছাত্র)-দলনেতা,মরিয়ম (স্বাস্থ্যকর্মী) রুপা মন্ডল (স্বাস্থ্যকর্মী),ক্যাম্প (২)ডাক্তার মনির আহমেদ রানা,জুয়েল রানা(ইনচার্জ)-দলননেতা,স্বর্ণা (স্বাস্থ্যকর্মী),সরস্বতী ডাকুয়া (স্বাস্থ্যকর্মী),এমবিবিএস ডাক্তার ও ভেটেরিনারিয়ান সহ স্বাস্থ্যকর্মী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণ।
উল্লেখ্য, ২৬ ও ২৭ মে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘূর্ণিঝড় রেমালে খুলনা, বাগেরহাট এবং সাতক্ষীরা ভোলা বরগুনা সহ বিভিন্ন উপকূলীয় অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় এবং এ অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। অনেকেই নিজের শেষ সম্বল ও মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু হারিয়ে ফেলে। কৃষক, শ্রমিক, দিনমজুরসহ ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষের অনেকেই কর্মহীন হয়ে অসহায় ও মানবেতর জীবনযাপন করছে। এছাড়াও উপকূলীয় অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা ভেঙে পড়ে।
ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের পাশাপাশি দূর্গত মানুষের মাঝে, স্যালাইন ও বিশুদ্ধ কোরান ট্যাবলেট সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করার পাশাপাশি জনমানুষের পাশে থেকে কাজ করে যাবে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।