বিপ্লব ইসলাম, লংগদু, রাংগামাটি
পরিবার পরিজন ছেড়ে বিদেশের মাটিতে পারি জমিয়েছিলেন রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলার দিন মজুর আবদুল জলিলের ছেলে ফরহাদ হোসেন।
গতবছর নিজের ভায়রার মাধ্যমে বিদেশের মাটিতে পা রাখেন ফরহাদ। একদিকে দালালের চাপ অন্যদিকে বিদেশের মাটিতে পা রাখতেই নিজের স্ত্রীর অপকর্মের কথা কানে যায় ফরহাদের। এসব চাপ সহ্য করতে না পেরে গত ২১ মে মঙ্গলবার বিদেশের মাটিতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন ফরহাদ।
স্ত্রী সুমি নিজের অপকর্ম ঢাকতে প্রেমিকাকে ফুফাতো ভাই হিসেবে পরিচিত করায় শশুর বাড়ির পরিবারের নিকট। এরপর শশুর বাড়ির লোকজনও তাকে এসব বিষয় নিয়ে মেয়ের পরিবারকে জানায়। কিন্তু তেমন কোন পতিকার পায়নি পরিবার ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছিলো সাজানো ফুফাতো ভাই ও স্ত্রীর লীলাখেলা।
ফরহাদ বিদেশ থেকে স্ত্রীর বিভিন্ন অপকর্মের ভিডিও ছবি দেখতে পায় নানা মাধ্যমে,যা নিয়ে প্রতিনিয়ত দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি সহ মোবাইল ফোনে ঝগড়া হতো।
একদিকে সবচাইতে বিশ্বাসী সঙ্গী স্ত্রীর মানষিক পিড়া দায়ক যন্ত্রণা অন্যদিকে দালাল চক্রের নানান চাপে কোনো কুল না পেয়ে আত্মহত্যার পথ বেঁচে নেয় এমনটাই দাবী ফরহাদ এর মা বাবার।
ফরহাদের স্ত্রী সুমি আক্তার বলেন, মৃত্যুর আগের দিন রাতেও আমার স্বামী আমাকে ফোন করে এবং সাথে অন্য একটি মেয়েকে লাইনে রেখে আমার সাথে কথা বলে। এসময় আমাদের তর্কবিতর্ক হয়। একটা সময় আমার স্বামী অপরদিকের মেয়েটিকে বলে ফোন রেখে দিচ্ছি পরে কথা বলবো। এটা বলে ফোন কেটে দেয়।পরের দিন সকালে আমি গার্মেন্টসে চলে যাই। এর মধ্যে আমার মোবাইল ফোনে বাড়ি থেকে অনেক ফোন আসে। দুপুরে খাবার খাওয়ার সময় আমি বাসায় কল দিলে, শুনি আমার স্বামী ফাঁস দিয়ে মারাগেছে। কেন মারাগেল কি হয়েছে কিছু জানিনা। আপনার সাথে আরিফ নামে একটি ছেলের সাথে অবৈধ সম্পর্ক আছে? প্রশ্নে তিনি বলেন, এরকম কিছুইনা আমার ফুফাতো ভাই আরিফ আমার বাসায় আসা যাওয়া করতো, এ নিয়ে সবাই সমালোচনা করতো। এছাড়া তেমন কোন কিছু হয়নি।
ছেলের মা ফজর বানু বলেন, আমার ছেলেকে আমি বিদেশে পাঠাতে চাইনি। আমার ছেলের বউ এর বোন জামাই তৌহিদ আমার ছেলেকে ফুসলিয়ে নিয়ে যায়। সৌদিতে নিয়ে আমার ছেলেকে মরুভূমিতে কাজ করতে দেয়,কোনো রকম খানা খাদ্য দেয়নি। একটা বছর হলো ছেলে বিদেশে গেছে, তার মুখ থেকে শান্তির কথা কখনো শুনিনি৷ দালালের চাপ আর বউ এর অবৈধ সম্পর্ক আমার ছেলের জীবনটাই শেষ করে দিলো। আমি তাদের বিচার দাবী করছি। আর আমরা গরিব মানুষ আমার ছেলেকে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করছি।
ছেলের বাবা আব্দুল জলিল বলেন, আমার কলিজাটাকে ফিরিয়ে আনার জন্য অনেক আগে থেকেই চেষ্টা করছি, দালালের কারনে পারছিনা। আমার ছেলে বিদেশে যাওয়ার পর থেকে বউ এর জ্বালা আর দালালের চাপে দিশে হারা হয়ে আত্মহত্যার পথ বেঁচে নিয়েছে।আমার ছেলেকে ফিরিয়ে আনতে সকলের সহযোগিতা চাই।
পরিবারের দাবী একটি মাত্র ছেলে, লাশটি যেনো তাদের মাঝে এনে দেওয়া হয়। দিন মজুর বাবা দিশেহারা হয়ে কি ভাবে ছেলেকে দেশে আনবে সেই আশাতে চোখের জ্বলে বুক ভাসাচ্ছেন।
এবিষয়ে লংগদু থানার অফিসার ইনচার্জ হারুনর রশীদ বলেন,যেহেতু ঘটনাটি অন্য দেশে হয়েছে সেহেতু আমাদের এখানে কিছু করার নেই তাছাড়া এখনো পর্যন্ত কোনো অভিযোগ ও আসেনি।